বাদল মিয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর গ্রামের নদ্দাপাড়ার মাদরাসাছাত্র মো. সায়মান (৯) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ‘মনের সন্দেহ’ থেকে বাবা বাদল মিয়া ঘাস কাটার কাঁচি দিয়ে সায়মনকে গলাকেটে হত্যা করেন।
ছেলে হত্যার দায় স্বীকার করে রোববার (২৫ জুলাই) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আনোয়ার সাদাতের আদালাতে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মো. এমরানুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি মো. এমরানুল ইসলাম জানান গতকাল শনিবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে বাদল তাঁর ছেলে সায়মন ও ভাগিনা সিয়ামকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী বিলে ঘাস কাটতে যান। ঘণ্টা খানেক পর বাদল বাড়ি ফিরে গেলেও সায়মন ফেরেনি। তখন বাদল জানায় সায়মন তাঁর আগেই বিল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে বিল সংলগ্ন একটি ধানি জমি থেকে সায়মনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সায়মন স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করত।
ওসি আরো জানান, সৌদিআরব প্রবাসী বাদলের সঙ্গে ২০১২ সালে সদর উপজেলার ভাদুঘর গ্রামের মিলি বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পাঁচ মাস দেশেই ছিলেন বাদল। পরবর্তীতে সৌদিআরবে যাওয়ার পর জানতে পারেন মিলি অন্তঃসত্ত্বা।
এরপর সায়মনের জন্ম হয়। কিন্তু বাদলের মনে সন্দেহ ছিল সায়মন তাঁর ছেলে না। প্রবাসে যাওয়ার পর মিলির সঙ্গে এক হুজুরের সম্পর্ক হয়েছে বলে সন্দেহ ছিল তার আগে থেকেই। এ সন্দেহ থেকে সায়মনকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে বাদল।
তিনি বলেন, সৌদিআরব থেকে ছুটিতে নিয়মিত দেশে আসা-যাওয়া করতেন বাদল। সায়মন ছাড়াও বাদলের আরও দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। ওই দুই ছেলে সন্তানের সঙ্গে সায়মনের বনিবনা হতো না।
এ নিয়ে বাদলের মনে আরও ক্ষোভ জমতে থাকে। সেজন্য পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘাস কাটার কথা বলে সায়মনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে বিলের পাশে ধানি জমিতে গলাকেটে হত্যা করে। হত্যকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ সায়মনের বাড়িতে যায়।
বাদলের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় গত শনিবারই তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে অধিকরত জিজ্ঞাসাবাদে বাদল জানায় সে-ই সায়মনকে গলাকেটে হত্যা করেছে।
বাদলের ধারণা ছিল সায়মনা তাঁর ছেলে না। সেজন্যই সে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আদালতে সে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় বাদলের স্ত্রী মিলি বেগম সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
রেডিওটুডে নিউজ/ইকে/এসআই