মঙ্গলবার,

২৩ এপ্রিল ২০২৪,

১০ বৈশাখ ১৪৩১

মঙ্গলবার,

২৩ এপ্রিল ২০২৪,

১০ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

আলোচিত ১৫টি মামলার তদন্ত কাজ শেষ পর্যায়ে 

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৩:৫৬, ২৫ আগস্ট ২০২১

Google News
আলোচিত ১৫টি মামলার তদন্ত কাজ শেষ পর্যায়ে 

চিত্রনায়িকা পরীমনি, প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ, কথিত মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা এবং আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা  হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্নজনের নামে থাকা সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ১৫টি মামলার তদন্ত কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

আগামী ‘এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে’ এসব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হবে। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুবুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এসব মামলার আসামিরা ছাড়াও তদন্তের প্রয়োজনে অনেককে ডেকে সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আপাতত আর কাউকে ডাকার পরিকল্পনা তাদের নেই। "আসামিদের আর্থিক অপরাধ রয়েছে কি না, তার তদন্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আমরা তথ্য চেয়েছি। তবে তদন্তের প্রয়োজনে আমরা এখনই সব বলতে চাচ্ছি না।"

"চিত্রনায়িকা পরীমনি, রাজ, পিয়াসা, হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্নজনের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা সিআইডির তদন্তে আছে। মামলাগুলো এখনো তদন্তাধীন। তবে আমরা মামলার তদন্ত কাজ অনেকাংশে গুছিয়ে এনেছি। কিছু ফরেনসিক প্রতিবেদন এখনো বাকি আছে। সব হাতে এলে আমরা তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া শুরু করতে পারব।

চিত্রনায়িকা পরীমনিকে এক মামলায় তিন দফা রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে যে সমালোচনার বিষয়ে সিআইডি প্রধান বলেন "প্রথমবার আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিনি। দিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে কিন্তু তাকে আর রিমান্ড চাওয়া হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া কিছু তথ্য মেলানোর প্রয়োজন ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে আবারো রিমান্ডে চাই। সিআইডি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়ে ভুলের ঊর্ধ্বে থাকতে চায়। তাই তদন্তের প্রয়োজনেই সব করা হচ্ছে।"

পরীমনি বা পিয়াসাদের বাসায় মদ বা মাদক রাখার বিষয়ে সিআইডি কী ধরনের তথ্য পেয়েছে প্রশ্ন করা হলে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুবুর রহমান বলেন, "মাদক মামলার আলামত তো পজেশনেই পাওয়া গেছে।  সেগুলো আদৌ মাদক কিনা তা জানতে কেমিকেল ও ফরেনসিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।"

জব্দ মাদকের উৎস জানতে চাইলে তিনি বলেন, "অনেকেই অনেক রকম তথ্য দিয়েছেন। কেউ বলেছেন বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছেন, কেউ বলেছেন বিমানবন্দর থেকে কিনেছেন, কেউ নানা উপায়ে সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু যেখান থেকেই সংগ্রহ করা হোক না কেনো, এইসব মাদক অনুনোমোদিত উপায়ে সংগ্রহে রাখা বা মজুদ রাখা আইনত অন্যায়।"

১৫ মামলার আসামিদের আর্থিক অপরাধের কী ধরনের তথ্য উপাত্ত মিলেছে প্রশ্ন করলে সিআইডি প্রধান বলেন, "তদন্তের এই পর্যায়ে আমরা মানি লন্ডারিং এর তথ্য উপাত্ত ইনকোয়ারি পর্যায়ে আছি। মানি লন্ডারিং মামলার ক্ষেত্রে দুটি পর্যায়। একটি যাচাই বাছাই, আরেকটি ইনকোয়ারি। আমরা ইনকোয়ারি পর্যায়ে আছি। প্রায় ২২টি জায়গা থেকে রিপোর্ট পেতে হয়। সব রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর যদি মনে হয় মানি লন্ডারিং হয়েছে, তাহলে আমরা তদন্ত করব।"

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গত ২৯ জুলাই তার গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করার পর তার বাসা থেকে বিদেশি মদ উদ্ধারের কথা জানিয়েছিল র‌্যাব। পরে তার বিরুদ্ধে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে পাঁচটি মামলা হয়। এরপর ১ আগস্ট বারিধারা ও মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে ফ্যাশন মডেল হিসেবে পরিচয় দেওয়া ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের বাড়ি থেকেও মদ ও মাদক উদ্ধারের কথা বলা হয়, দুজনের বিরুদ্ধে আলাদা মামলাও দায়ের করা হয়।

‘ডিজে পার্টি’ আয়োজনের আড়ালে অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ আগস্ট ঢাকায় শরিফুল হাসান (মিশু হাসান) ও মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসান নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পরদিন র‌্যাব যায় পরীমনির বনানীর বাসায়। কয়েক ঘণ্টা অভিযান শেষে পরীমনি এবং তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে আটক করে নিয়ে যায় র‌্যাব।

এরপর অভিযান চলে বনানীতে চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাড়িতে। সেখান থেকে রাজ এবং তার ব্যবস্থাপক সবুজ আলীকে র‌্যাব আটক করে। এরপর ডিবি গ্রেফতার করে পরীমনির কাস্টিমিউ ডিজাইনার অমিকে।

৫ আগস্ট উত্তরায় র‌্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীমনি ও রাজের বাড়িতে ‘মদ ও মাদকদ্রব্য’ পেয়েছেন তারা। পরীমনির একটি মদের লাইসেন্স পাওয়া গেলেও তার মেয়াদ ছিল না। এছাড়া রাজকে  গ্রেপ্তারের সময় কম্পিউটারে 'পার্ন কনটেন্ট' পাওয়া গেছে।মিশু ও জিসানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পরীমনি ও রাজের বাড়িতে অভিযান চালানো হয় বলে কমান্ডার আল মঈন সেদিন জানান।

এরপর চারজনকে পুলিশের কাছে  হস্তান্তর করা হয়, বনানী থানায় দায়ের করা হয় মাদক আইনে দুটি মামলা। এছাড়া রাজ ও সজুজের বিরুদ্ধে পর্নগ্রাফি আইনে আরেকটি মামলা করা হয়। র‌্যাব করা জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘বিপুল পরিমাণ মদ এবং আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়। আর রাজের ফ্ল্যাট থেকে মদ ও ইয়াবার সঙ্গে ‘সেক্স টয়’ এবং একটি সাউন্ড বক্স জব্দ করার কথা বলা হয়।

রেডিওটুডে নিউজ/এসআই

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের