শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪,

৬ বৈশাখ ১৪৩১

শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪,

৬ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

সনদ বাতিল হতে পারে সিবিআইইউ’র

সরওয়ার আজম মানিক, কক্সবাজার

প্রকাশিত: ০০:১৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

Google News
সনদ বাতিল হতে পারে সিবিআইইউ’র

কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (সিবিআইইউ)

৩ মাসের মধ্যে বিগত সকল বছরের অডিটসহ হাল বছরের অডিট সম্পন্ন করা না হলে এবং একই সময়ের মধ্যে সংরক্ষিত তহবিলে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে চলিতি বছরের সুদাসল সমেত পুনর্ভরণে ব্যর্থ হলে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (সিবিআইইউ)’র সনদ বাতিল সহ দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুশয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

এছাড়া মালিকানা বিরোধ ও শিক্ষার্থীদের ২১ দফা দাবী আদায়ের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণরুপে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি। তাছাড়া সিবিআইইউ’র সাময়িক অনুমতি নবায়নের আবদনের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি নিয়োগকৃত উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগের জন্য ১ মাসের মধ্যে প্যানেল পাঠানোর নির্দেশ সহ ১৬ শর্ত জুড়ে দিয়ে ওই নির্দেশনা দিয়েছে  বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যবেক্ষণকারী ওই সংস্থাটি।

ইউজিসি’র পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ) ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত স্মারকের অন্যান্য শর্ত অনুযায়ী সিবিআইইউ’র নামে ২ একর নিষ্কন্টক, অখন্ড ও দায়মুক্ত জমি কিনে  যথাযথ কর্তৃপক্ষ  থেকে ভবনাদির প্ল্যান অনুমোদন নিয়ে ১ বছরের মধ্যে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু করা।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান ক্যাম্পাস মোটেও শিক্ষাবান্ধব নয়। দ্রুত জমি ক্রয়পূর্বক অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি নিরিবিলি পরিবেশে ক্যাম্পাস স্থানান্তর বা ক্যাম্পাসের নিচতলা ও এর সামনের বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণ করার নির্দেশ।  বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ডীড় এবং জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ অ্যান্ড ফার্মস থেকে দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত উপাচার্য, উপ উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োজিত নেই।  রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত না হয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। আগামী ১ মাসের মধ্যে উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগের নিমিত্ত প্যানেল প্রেরণ করতে হবে।

সিবিআইইউ’র অধিকাংশ কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে নিয়োজিত আছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্থলে পূর্ণকালীন কর্মকর্তাদের নিয়োগদান করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মনোনীত অডিট ফার্ম দ্বারা এখন পর্যন্ত অডিট করা হয়নি । আগামী ৩ মাসের মধ্যে বিগত সকল বছরের অডিটসহ হাল বছরের অডিট সম্পন্ন করতে হবে। উক্ত সময়সীমার মধ্যে নিরীক্ষা সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী সনদ বাতিল এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

৩ মাসের মধ্যে সংরক্ষিত তহবিলে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অদ্যাবধি হিসেব করে সুদাসল সমেত পুনর্ভরন করতে হবে। উক্ত সময়সীমার মধ্যে সুদাসল সমেত পুনর্ভরনে বার্থ হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী সনদ বাতিল এবংদায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। এছাড়াও, ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়টির সংরক্ষিত তহবিলের অর্থ কমিশন ও সরকারের অনুমোদন ব্যতিরেকে উত্তোলন করা যাবে না এ মর্মে সতর্ক করা যেতে পারে। একই সময়ের  মধ্যে  প্রতিটি বিভাগে পূর্ণকালীন কমপক্ষে ১জন করে অধ্যাপক/সহযোগী অধ্যাপক এবং সহকারী অধ্যাপকসহ  নিয়োগ করে কমিশনে অবহিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। গবেষণাখাতে অর্থ বরাদ্দসহ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন। বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদানের (৩% মুক্তিযোদ্ধা ও ৩% প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র ও মেধাবী) মধ্যে ঘাটতি রয়েছে। ভর্তির আসন সংরক্ষণ ও বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

আগামী ৩ মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য চাকুরীর প্রবিধানমালা তৈরি করে কমিশনের অনুমোদন গ্রহন করতে হবে। সিন্ডিকেটে কমিশন ও সরকার কর্তৃক মনোনীত সদস্য এবং উপাচার্য মনোনীত ডীন ও বিভাগীয় প্রধান নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০২০ সালে মাত্র ১টি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী সিন্ডিকেট গঠন এবং কমিশনের সিন্ডিকেট পরিচালনার নিয়মাবলী অনুযায়ী সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৭ বছরে ১টিও সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। নিয়মিত সমাবর্তন আয়োজনের করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির  অধিকাংশ প্রোগ্রামের সিলেবাস হালনাগাদকৃত নয়। সিলেবাসসমূহ দ্রুত হালনাগাদ করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্লাসরুম, ল্যাব, সেমিনারকক্ষ ও লাইব্রেরী আধুনিকায়ন করে শিক্ষা উপযোগী করতে হবে। লাইব্রেরীতে বিষয়ভিত্তিক মৌলিক বই অন্তর্ভুক্ত, ইলেক্ট্রনিক জার্নাল সুবিধা, ইউডিএল এর সদস্যপদ গ্রহণ এবং ফটোকপি বই ও নোটবই অপসারণ করতে হবে। লাইব্রেরীর বঙ্গবন্ধু কর্ণারে বঙ্গবন্ধুর জীবন আদর্শ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দর্শন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক বই সংযোজনপুর্বক কমিশনে জানানোর সুপারিশ করা হলো।

এবিষয়ে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল্লাহ বলেন, প্রায়ই ৩ মাসে আগে রাষ্ট্রপতি নিয়োগকৃত উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগের জন্য আমরা প্যানেল পাঠিয়েছি তবুও কেন ইউজিসি প্যানেল পাঠাতে বলেছে জানিনা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিন্ডিকেট কমিশনের সভা হয়েছে। সেখানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি উপস্থিতি ছিল। কিন্তু ইউজিসি তারপরও সিন্ডিকেট সভা হয়নি বলে শর্তে উল্লেখ করেছে এটা ইউজিসি’র ভুল।

তিনি আরো বলেন,  অডিট সম্পন্ন করার জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া সংরক্ষিত তহবিলে সুদাসল সমেত পুনর্ভরণে বিষয়টি সিন্ডিকেট দেখছে। লাইব্রেরীর কাজ চলছে, জমি খুজছে সিন্ডিকেট। আশা করছি খুব দ্রুত সব সমস্যার সমাধান হবে।

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের