শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪,

৬ বৈশাখ ১৪৩১

শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪,

৬ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

ইমদাদুল আজাদ, ঢাবি

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২০ অক্টোবর ২০২১

আপডেট: ০৪:০১, ২০ অক্টোবর ২০২১

Google News
সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

ছবি: সংগৃহীত

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। 

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘সাম্পদায়িকতা রুখে দাঁড়াও, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ো’ স্লোগানে তারা এই মানববন্ধন করেন। এতে সংহতি প্রকাশ করে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলসহ বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে যে নাশকতা, বিশেষ করে প্রতিমা ভাঙ্গা এবং মন্দিরে আক্রমণ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ইতিহাস এবং ঐতিহ্যগতভাবেই এদেশের সুমহান ঐতিহ্য এটি। মাঝে মধ্যে বাংলাদেশের মতো অসাম্প্রদায়িক, সম্প্রীতির দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠে বিভিন্ন ঘটনা সৃষ্টি করে যা আমাদের জাতির জন্য খুবই দূর্ভাগ্য ও দুঃখজনক। দুঃখজনক হলেও সত্যি এ ধরনের অপশক্তি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুযোগ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। যে সম্প্রীতির বন্ধনে আমরা থাকি তা বিনষ্ট করে, যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। 

তিনি আরো বলেন, সরকারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে এই ঘটনাগুলো কারা ঘটিয়েছে তা চিহ্নিত করে তাদের শাস্তি দেওয়া এখন জরুরি কাজ। এটি যদি না করা হয় তাহলে ভবিষ্যতেও নানা সময়ে নানা সুযোগে এই অপশক্তি আমাদের অসাম্প্রদায়িক, সম্প্রীতির বন্ধনকে নষ্ট করার অপতৎপরতায় লিপ্ত হবে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, আমাদের সংবিধানে যে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ একটি বিষয় ছিল, সেটিকে আমরা খণ্ডন করেছি। দু'জন সেনা শাসক বারবার পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা, প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনা, নারী-পুরুষের মধ্যে যে সাম্য সেটিকে আমরা পেছনে ফেলে দিয়েছিল। পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনলেও তা আমরা তাত্ত্বিকভাবে ফিরিয়েছি, কিন্তু বাস্তবে ফেরাতে পারিনি। বাস্তবে প্রয়োগ না থাকার কারণে এই ঘটনাগুলো ঘটছে।

সাদা দলের আহবায়ক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. লুৎফর রহমান বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আমাদেরকে এখানে দাড়াতে হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রতিবাদে। এতদিন পরেও আমরা আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে পারিনি, এই ব্যার্থতার দায় যাদের ওপর বর্তায় তারা এসব এড়াতে পারে না। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, এসব ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তদন্তের মাধ্যমে তাদের শাস্তি দিয়ে এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।

টেলিভিশন ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগোর অধ্যাপক শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষই অসাম্প্রদায়িক। গুটিকয়েক মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে লালন করে। এর পেছনে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। এসব সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করতে এদেশের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বলেন, যা কিছু ঘটছে, তা একটি অশনিসঙ্কেত। সর্ষের মধ্যে ভূত রয়েছে। এই সর্ষে হচ্ছে রাজনীতি ও অর্থনীতি। এই ঘটনার পর এখনও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন হয়নি। এখনও সেখানে ধ্বংসস্তুপ রয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, যা কিছু হয়েছে, তা যেন আর না ঘটে। এই ঘটনার দ্রুত বিচার করতে হবে, দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যেন বিচারের বাণী নিভৃতে না কাঁদে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ বলেন, যা কিছু ঘটছে, তা একটি অশনিসঙ্কেত। সর্ষের মধ্যে ভূত রয়েছে। এই সর্ষে হচ্ছে রাজনীতি ও অর্থনীতি। এই ঘটনার পরও এখনও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন হয়নি। এখনও সেখানে ধ্বংসস্তুপ রয়েছে সেখানে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। যা কিছু হয়েছে, তা যেন আর না ঘটে। এই ঘটনার দ্রুত বিচার করতে হবে, দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যেন বিচারের বাণী নিভৃতে না কাঁদে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়ার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছামাদ,  বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, নীল দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক আব্দুর রহিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী প্রমুখ।
 

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের