সংগীত দুনিয়ার তারকাখচিত ৬৪তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডস উদযাপনে ভিডিওর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে চমকে দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শক্তিশালী বক্তব্যে দর্শকদের প্রতি যার যেভাবে সম্ভব ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন করেছেন তিনি। তার মন্তব্য, ‘সংগীতের সবচেয়ে বিপরীত কাজ কী? যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরের নীরবতা এবং মানুষ হত্যা। কোনও যুদ্ধে ঠিক করা যায় না কে বেঁচে থাকবে এবং কে চিরস্থায়ীভাবে নীরব হয়ে যাবে।’
সংগীতশিল্পী ও বাদ্যযন্ত্রীদের প্রতি জেলেনস্কির আহ্বান, ‘রুশ বোমাবর্ষণে নেমে আসা নীরবতাকে সুরে ও গানে সরিয়ে দিন। আজই আমাদের গল্প বলতে মুখ খুলুন। যে যেভাবে পারেন আমাদের সমর্থন করুন, যেকোনও। তবে আর নীরবতা নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রে লাস ভেগাসের এমজিএম গ্র্যান্ড গার্ডেন এরেনায় রবিবার (বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোর) গ্র্যামির জমকালো আসরে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ব্যাপারে মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। অভিনেতা থেকে প্রেসিডেন্টের মর্যাদায় যাওয়া ৪৪ বছর বয়সী এই তারকা বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে যুদ্ধের চিত্র তুলে ধরেছেন। এবার নিজ দেশের জন্য সমর্থন জোগাতে সংগীতের সর্বজনীন ভাষাকে বেছে নিলেন তিনি। তার কথায়, ‘আমাদের সংগীতশিল্পীরা টাক্সেডোর পরিবর্তে এখন শরীরে বর্ম পরে আছেন। তারা হাসপাতালে আহতদের গান গেয়ে শোনান।’
জেলেনস্কির দাবি, ইউক্রেন প্রাণবন্তভাবে বেঁচে থাকা, ভালোবাসা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। ভিডিও বার্তার সবশেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, নিজের দেশবাসী ও ইউক্রেনের নারীরা শিগগিরই গ্র্যামি মঞ্চের শিল্পীদের মতো মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারবে।
জেলেনস্কির ভিডিও বার্তা প্রদর্শনের পর অনুষ্ঠানে ইউক্রেনের নাগরিকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ‘ফ্রি’ শিরোনামের নতুন একটি গান গেয়ে শুনিয়েছেন আমেরিকান সংগীতশিল্পী জন লিজেন্ড। তার সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন ইউক্রেনের গায়িকা মিকা নিউটন ও সুজানা ইগলিডান এবং একটি গসপেল ঘরানার কয়ার। এছাড়া কবিতা আবৃত্তি করেছেন ইউক্রেনের কবি লিউবা ইয়াকিমচাক। এ সময় মঞ্চের বড় পর্দায় দেখানো হয় রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেনের বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপের স্থিরচিত্র।
গ্র্যামিতে হাজির হয়ে চমকে দিলেন জেলেনস্কি
গান শেষে দর্শকদের জন্য ইউক্রেনের শরণার্থীদের সহায়তা প্রদানকারী একটি দাতব্য সংস্থার বিবরণ দেওয়া হয়। এবারের গ্র্যামি আসরে ছিলেন লেডি গাগা, জাস্টিন বিবার, কানিয়ে ওয়েস্ট, বিলি আইলিশের মতো তারকারা।
এক মাস আগে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ সামরিক বাহিনী। এ কারণে লাখ লাখ লোক দেশ ছেড়েছেন। ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। রাশিয়া নিজেদের এই পদক্ষেপকে বিশেষ অভিযান হিসেবে অভিহিত করেছে। সংঘাত শুরুর পর ইউক্রেনের অনেক সংগীতশিল্পী, প্রযোজক এবং ডিজে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এবং তাদের রণাঙ্গনের রিপোর্টার ও সামরিক তহবিল সংগ্রহকারী হিসেবে কাজ করতে দেখা গেছে।
রেডিওটুডে নিউজ/এমএস