বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪,

১১ বৈশাখ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪,

১১ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

কান্দাহার কেনো তালেবানের প্রধান টার্গেট?

সোহেল রানা

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ২ আগস্ট ২০২১

আপডেট: ০৪:৪৪, ৩ আগস্ট ২০২১

Google News

আফগানিস্তানের অন্তত চারটি প্রদেশে লড়াই এখন তুঙ্গে। ইরান, পাকিস্তান ও তাজিকিস্তান সংলগ্ন কিছু বর্ডার ক্রসিং দখলে নেয়ার পর তালেবান রণকৌশলে পরিবর্তন এনেছে।

এতদিন দুর্গম ও পাহাড়ি এলাকা এবং সীমান্ত অঞ্চল টার্গেট করে অভিযান চালালেও এবার তারা গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর কেন্দ্রস্থল দখলে ‘অলআউট’ অপারেশন শুরু করেছে।

তারই একটা নমুনা কান্দাহার বিমানবন্দরে শনিবারের রকেট হামলা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমর্থিত আফগান সরকারের প্রতি তালেবানের বার্তা পরিষ্কার- ‘সময় ফুরিয়ে আসছে, যে যার মতো পালাও।’

তালেবান যে চারটি প্রদেশে হামলা জোরদার করেছে এগুলো দেশটির পশ্চিম আর দক্ষিণে অবস্থিত। কান্দাহার, হেলমান্দ, হেরাত আর লস্কর গাহ। এরইমধ্যে লস্কর গাহ প্রদেশের সাতটি জেলার দখল চলে গেছে তালেবানের হাতে। তবে তাদের বিশেষ নজর কান্দাহারে। তালেবান কেন কান্দাহার দখলে মরিয়া?

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহার আফগানিস্তানের ৫-৬টি বড় ও প্রধান শহরের একটি। এটি আফগান পশতুনদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। বহুবছর ধরে পশতুন শাসকরা এই শহরকে ভিত্তি ধরে আফগানিস্তান শাসন করে গেছেন।

৯০ এর দিকে সোভিয়েত সেনারা নজিবুল্লাহকে ক্ষমতায় বসিয়ে আফগানিস্তান ছেড়ে গেলে, আফগানরা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়ে যায়। একেক শহরে চলে একেক বাহিনীর রাজত্ব। একসময় আফগান মুজাহিদদের সম্মিলিত হামলার মুখে নজিবুল্লাহ আশ্রয় নেন জাতিসংঘ কম্পাউন্ডে। আফগানিস্তানে জারি হয় ইসলামি হুকুমত। 

কিন্তু মুজাহিদরাও পরে কোন্দলে জড়ায়। তারা সমঝোতার মাধ্যমে কয়েকদফায় সরকার গঠন করলেও অচিরেই তা ভেঙ্গে যায়। ঠিক এই সময়ে কান্দাহারকে কেন্দ্র করে পশতুন নেতা মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে জন্ম হয় তালেবানের। কান্দাহার হয় পশতুন সমর্থিত তালেবানের প্রধান ঘাঁটি। 

২০০১ সালে আমেরিকার নেতৃত্বে ন্যাটোর হামলার মুখে তালেবান কান্দাহার ছেড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু যুদ্ধের ২০ বছরের মাথায় আমেরিকা ও ন্যাটোরা সেনাদের স্বদেশে ফিরে যাবার ঘোষণায় সুযোগে থাকা তালেবান গত ক’মাসেই শতাধিক জেলার নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়।

তালেবান ইরান, পাকিস্তান সংলগ্ন কয়েকটি বর্ডার ক্রসিং দখলে নিয়েছে। এবং উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান ও চীন সীমান্তে থাকা আফগান সেনাদের তাড়িয়ে কয়েকটি এলাকা দখল করেছে।

এবার তারা মরিয়া হয়ে লড়াই করছে কান্দাহার, হেরাত, হেলমান্দ ও লস্কর গাহ পুনরুদ্ধারের জন্য। আফগানিস্তানের দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের এই চারটি প্রধান প্রদেশে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবান যোদ্ধাদের এখন তুমুল লড়াই চলছে।

তালেবান যোদ্ধারা কান্দাহার, হেরাত ও লস্কর গাহ শহরের অংশে ঢুকে পড়েছে। তবে শহরগুলোর প্রাণকেন্দ্রে তারা ঢুকতে পারেনি। এরকম বহু শহরের অংশবিশেষ তালেবান যোদ্ধারা দখল করে রেখেছে কিন্তু সরকারি সেনাদের প্রতিরোধে শহরগুলোর কেন্দ্রস্থলে যেতে পারছে না। 

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমেরিকার সেনারা সম্পূর্ণভাবে আফগানিস্তান ছাড়বে। এরপরই আফগান সেনা ও তালেবানের মধ্যে মূল লড়াই শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অনেকেই তীব্র গৃহযুদ্ধের আশংকা করছেন। এই অবস্থায় দেশটির প্রধান শহরগুলোর ভাগ্য নিয়ে ভীষণ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সরকারি সেনারা কতদিন নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে/এসআই

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের