ভারতের গুজরাটে ২০০২ সালের ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গণধর্ষণকারী ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিলকিস বানো। আজ (বুধবার) বিলকিস বানোর পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন জানানো হয়।
২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময়ে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ২১ বছর বয়সী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করেছিল এগারো জন দুর্বৃত্ত। বিলকিসের তিন বছরের শিশু কন্যাসহ তার পরিবারের ৭ জনকে তার চোখের সামনেই নির্মমভাবে খুন করা হয়। গত ১৫ আগস্ট ওই এগারো জন ধর্ষককে মুক্তি দেওয়া হয়। বিলকিসের ধর্ষকরা ছাড়া পেলে জেলের বাইরে তাদের ফুল-মালা দিয়ে বরণ করা হয়।
ওই এগারো জনের সাজা মওকুফ করার সপক্ষে শীর্ষ আদালতে হিন্দুত্ববাদী গুজরাট সরকারের পক্ষ থেকে সাফাই দেওয়া হয়েছিল, তারা কারাগারে ‘ভাল আচরণ’ করত। সুপ্রিম কোর্টে গুজরাট সরকারের পক্ষে হলফনামা দিয়ে বলা হয়, দোষী সাব্যস্ত হওয়া এগারো জন চোদ্দ বছর জেল খেটেছে। তা ছাড়া কারাগারের মধ্যে তারা ভাল ব্যবহার করত। তাই তাদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে আদালতে জানানো হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত বিলকিসের পক্ষ থেকে আজ (বুধবার) আদালতে প্রথম আবেদনে ১১ জন আসামির মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এবং অবিলম্বে তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে। দ্বিতীয় আবেদন হল, সুপ্রিম কোর্টের মে মাসের আদেশের উপর রিভিউ পিটিশন। আবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত যেখানে বলা হয়েছিল যে গুজরাট সরকার দোষীদের মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বিলকিস বলেন, এ জন্য উপযুক্ত সরকার মহারাষ্ট্র সরকার। কারণ মহারাষ্ট্রে মামলার বিচার হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে মুক্তির নীতিটি গুজরাট নয়, মহারাষ্ট্রের প্রযোজ্য হওয়া উচিত। আইন অনুযায়ী উপযুক্ত সরকার মানে এ ক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র সরকার, গুজরাট সরকার নয়। কারণ, মহারাষ্ট্রেই ওই মামলার শুনানি হয়েছিল এবং সাজাও হয়েছে এখানে।
বিলকিসের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির দাবিও জানানো হয়েছে।প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় আশ্বস্ত করেছেন, কবে এই বিষয়ে শুনানি হতে পারে তা তিনি দেখবেন। উভয় আবেদন একসাথে শুনানি করা যায় কী না তাও তিনি খতিয়ে দেখবেন।
এভাবে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক একদিন আগে আজ (বুধবার) সুপ্রিম কোর্টে বিলকিসের পক্ষ থেকে ওই আবেদন দায়ের করা হল। ১৮২ আসন সমন্বিত গুজরাটে আগামী ১ ও ৫ ডিসেম্বর দুই পর্বে ভোটগ্রহণ করা হবে। ফল ঘোষণা হবে ৮ ডিসেম্বর।
রেডিওটুডে নিউজ/মুনিয়া