বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪,

১২ বৈশাখ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪,

১২ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করলো চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ২৩ অক্টোবর ২০২১

আপডেট: ১৯:০৯, ২৩ অক্টোবর ২০২১

Google News
তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করলো চীন

ফাইল ছবি

তাইওয়ানে হামলা করা হলে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে মোকাবিলা করবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এমন বক্তব্যের পর হুংকার ছেড়েছে চীন। মন্তব্য করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে আরো সংযত ও সাবধান হওয়ার পরমর্শও দিয়েছে দেশটি। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, চীন তাইওয়ান আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের প্রতিরক্ষায় চীনকে সামরিকভাবে প্রতিরোধ করবে। বাইডেনের এমন ঘোষণাকে তাইওয়ান ইস্যুতে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতার’ দীর্ঘস্থায়ী মার্কিন নীতি থেকে প্রস্থান বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে তাইওয়ানের বিষয়ে মার্কিন নীতি ‘পরিবর্তন নীতি’ পরিবর্তন করা হবেনা বলে পরে সাংবাদিকদের জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। 

হোয়াইট হাউজের বক্তব্য, ‘তাইওয়ানের সঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষা সম্পর্ক তাইওয়ান সম্পর্ক আইনের অধীনে পরিচালিত হয়। আমরা এই আইনের অধীনে আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করব, আমরা তাইওয়ানের আত্মরক্ষার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখব, এবং তাইওয়ান বিষয়ে চীনের যে কোনও একতরফা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করব’।

এদিকে, বাইডেনের এই ঘোষণার পর তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কবার্তা দিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আরো সাবধান হওয়া।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন শুক্রবার বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বলেন, ‘নিজের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে চীন কখনও আপোস করে না। আমরা আশা করব, ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের এই নীতিকে সম্মান করবে এবং ভবিষ্যতে তাইওয়ান ইস্যুতে কোনো প্রকার মন্তব্য ও পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হবে।’

সিএনএন এর একটি টাউন হলে বৃহস্পতিবার তাইওয়ানকে রক্ষা করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘হ্যাঁ। এ ব্যাপারে আমাদের অঙ্গীকার রয়েছে’।

বাইডেন বলেন, ‘অবশ্যই এবং অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের পাশে থাকবে; আর চীন, রাশিয়াসহ সবাই এটিও জানে যে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী আছে যুক্তরাষ্ট্রের। তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের দ্রুত সামরিক উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে কিনা এক দর্শকের এমন প্রশ্নের উত্তরেও বাইডেন বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ’।

তিনি বলেন, চীন, রাশিয়া এবং বাকি বিশ্ব জানে আমরা বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী।

বাইডেন বলেন, ‘আপনার যা চিন্তা করতে হবে তা হল তারা এমন ক্রিয়াকলাপে জড়িত হবে কিনা যা তাদের এমন অবস্থানে নিয়ে যাবে যেখানে তারা গুরুতর ভুল করতে পারে’।

‘আমি চীনের সঙ্গে শীতল যুদ্ধ চাই না। আমি শুধু চাই চীন যেন বুঝতে পারে যে আমরা পিছু হটতে যাচ্ছি না, আমরা আমাদের কোন মতামত পরিবর্তন করতে যাচ্ছি না’।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বহু বছর ধরে এই বিষয়ে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’র নীতি বজায় রেখেছিল এবং তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছিল। কিন্তু এর আগে চীনা আক্রমণের ক্ষেত্রে তাইওয়ানের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।

বার্তা সংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, মিত্র হলেও তাইওয়ানকে রক্ষার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’র নীতি চর্চা করে আসছে ওয়াশিংটন। আর এ কারণেই তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও ‘তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট’ নামে একটি চুক্তি অনুসারে দ্বীপটির কাছে অস্ত্র বিক্রি করে থাকে ওয়াশিংটন। চুক্তি অনুযায়ী, আত্মরক্ষার জন্যই তাইওয়ানকে সহায়তা করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।

চীন সম্প্রতি তাইওয়ানের উপর চাপ বাড়িয়েছে এবং জাতীয় দিবস ১ অক্টোবর থেকে শুরু করে টানা কয়েকদিন তাইওয়ানের আকাশ সীমায় কয়েক ডজন যুদ্ধ বিমান পাঠায় চীন। 

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চিউ কুও-চেং গত সপ্তাহে বলেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে চীন তাইওয়ানে ‘পূর্ণ মাত্রায়’ আক্রমণ করতে সক্ষম হবে। চীন তাইওয়ানের আকাশে সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধবিমান পাঠানোর কারণে তিনি এ ভবিষ্যদ্বাণী করেন।

চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে চার দিনে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানার মধ্যে প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল চীন। তারপর থেকেই অঞ্চলটিতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তবে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন চার দশক আগে তাইওয়ান নিয়ে একটি চুক্তি করে। ওই চুক্তিতে দুই পক্ষই বিরোধপূর্ণ বিষয়ে নাক না গলাতে সম্মত হয়, যা দুই পক্ষকে সংঘাত থেকে বিরত রেখেছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটেছিল। তারা ‘ঠান্ডা লড়াই’ থেকে বেরিয়ে এসেছে। যার ফলে দেশ দুটি গভীর অর্থনৈতিক সম্পর্কও স্থাপন করতে পেরেছে। অন্যদিকে, তাইওয়ান ‘এশিয়ার বাঘ’ হিসেবে গড়ে উঠেছে এবং সেখানে শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

রেডিওটুডে নিউজ/এমএস/জেএফ

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের