প্রতীকী ছবি
মাগুরায় চাঞ্চল্যকর সাগরিকা হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শহিদুল ইসলাম মোল্লা নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতার অভিযুক্ত হত্যাকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনায় জড়িত অন্য তিন অভিযুক্তকে খুজছে পিবিআইয়ের তদন্ত টিম।
জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় অন্যকে ফাঁসাতে পরিকল্পিত ভাবে সাগরিকাকে হত্যা করা হয়। গতকাল বুধবার পিবিআই ঝিনাইদহ জেলা থেকে এ সব তথ্য জানিয়েছে।
পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা গোলাম রসুল জানান, ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি সকাল ১১টার দিকে সাগরিকা নড়াইলস্থ নিজ বাড়ি থেকে শিশু সন্তানকে রিকশা কিনে দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাড়ি ফিরেনি। ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি দুপুর পৌনে ৩টার দিকে মাগুরা জেলার শালিখা থানাধীন দেশমুখপোড়া গ্রামের চিত্রা নদীতে বস্তাবন্দী অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সাগরিকার স্বামী জাহাঙ্গীর শেখ শালিখা থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়া হয়। পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের গাইড লাইন ও দিক নির্দেশনায় পিবিআইর পরিদর্শক গোলাম রসুল মামলাটি তদন্ত করেন।
পিবিআই জানায়, নিহত সাগরিকা একাধিক বিয়ে করেছে। তার পূর্ব পরিচিত লোকজন অন্যকে ফাঁসাতে সাগরিকাকে বাসা থেকে ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি ফোন করে নড়াইল বাস টার্মিনালে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর দিনভর বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরার পর করে। এমনকি নতুন থ্রি-পিস কিনে দেয়। অবশেষে রাত ৮টার দিকে পরিকল্পনা মতে, চিত্রা নদীর পাড়ে সাগরিকাকে নিয়ে যায়। সেখানে অভিযুক্ত আলেয়া মেম্বার সাগরিকার কোল থেকে তার শিশু বাচ্চাকে টেনে তার কোলে নেয়। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত শহিদুল চিত্রা নদীর পাড়ে থাকা ছেড়া জাল দিয়ে সাগরিকার পা বেঁধে ফেলে। অন্য আসামি সাগরিকার ওড়না দিয়ে তার গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এরপর বস্তায় লাশ ভর্তি করে নদীতে ফেলে দেয়। হত্যার পর অভিযুক্তরা নিহত সাগরিকার কোলের শিশুকে কিছু দূরে গিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়।
পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মামলা অনুসন্ধানে গিয়ে পিবিআই মাইক্রোবাস যোগে অভিযুক্ত আসামির এলাকায় করোনার টিকার তালিকা তৈরী করতে যায়। ওই তালিকা নাম লিখতে গিয়ে গত ২২ আগস্ট দুপুরে যশোরের বাঘারপাড়া খলশী এলাকা থেকে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম মোল্লাকে গ্রেফতার করে। তার গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে সাগরিকা হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।