বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪,

১১ বৈশাখ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪,

১১ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

খুলনায় উন্মুক্ত ড্রেনে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল

শুভ্র শচীন, খুলনা

প্রকাশিত: ১৮:২২, ১৯ অক্টোবর ২০২১

Google News
খুলনায় উন্মুক্ত ড্রেনে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল

ছবি: সংগৃহীত

খুলনা নগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়া ও জিন্নাহপাড়া এলাকার প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দার যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি মতিয়াখালী খালের (কংক্রিটের ড্রেন) পাশে। এই পথে চলতে গিয়ে একটু ঝাঁকি খেলেই রিকশা-ইজিবাইকের যাত্রীরা আঁতকে ওঠেন, এই বুঝি কাত হয়ে খালে পড়ল গাড়ি। রাতে খালটির পাশ দিয়ে চলা আরও ভয়ংকর।

প্রায় আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খালটির কোথাও কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। নেই সতর্কতা সাইনবোর্ডও। অতিবৃষ্টিতে এই খালের পানি উপচে সড়কে চলে আসে। এ সময় খাল ও সড়ক একাকার হয়ে যায়।

শুধু মতিয়াখালী খালই নয়, খুলনা নগরের অনেক খালকে কংক্রিটের ড্রেনে রূপান্তর করা হলেও এগুলোর বেশিরভাগই এখনও উন্মুক্ত। এসব ড্রেনের পাশ দিয়ে দিনের পর দিন ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় এসব উন্মুক্ত ড্রেনে পড়ে আহত হয়েছে শিশুসহ রিকশা ও সাইকেল চালকরা।

খুলনা সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, নগরে একহাজার ২০৫ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে। এরমধ্যে কতটুকু অংশ উন্মুক্ত তার পরিসংখ্যান দিতে পারেনি সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ। তবে নগর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষেত্রখালী খাল, গোড়া খাল, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নবীনগর খাল, বাস্তুহারা খালের একাংশসহ বিভিন্ন এলাকার অনেক কংক্রিটের ড্রেন উন্মুক্ত।

সম্প্রতি টুটপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মহিরবাড়ি খালের ওপারে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি ড্রেনের পাশে। পুরো ড্রেন উন্মুক্ত। রাস্তা থেকে ড্রেনের উচ্চতা কোথাও একফুট, কোথাও কিছুটা বেশি। ড্রেনটি ১৫-২০ ফুট চওড়া। কয়েকটি স্থানে প্রশস্ততা সড়কের দ্বিগুণ।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, ড্রেন করার সময় রেলিং না দেওয়াটা অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত ছিল। অবিলম্বে এসব ড্রেনে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিতে হবে। নইলে যে কোনো দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায় সিটি করপোরেশনকেই নিতে হবে।

কেসিসির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরিফ হোসেন মিঠু বলেন, ড্রেনে কয়েকবার বাচ্চারা পড়ে গেছে। সবাই মিলে উঠিয়েছি। হাঁস-মুরগি প্রায়ই পড়ে যায়।

খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ বলেন, নগরের ভেতরের সব ড্রেনের ওপর স্লাব দেওয়া হচ্ছে। কোনো ড্রেন উন্মুক্ত থাকবে না। তবে বিশাল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের খালে স্লাব দেওয়া অনেক ব্যয়বহুল। এজন্য মতিয়াখালী ও ক্ষেত্রখালী খালেরপাশে রেলিং দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পে সাত কিলোমিটার রেলিংয়ের অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী বছর কাজ শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

খুলনা সিটির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে নগরের সড়ক ও ড্রেনেজ, তথা জলাবদ্ধতা নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, খুলনা সিটি করপোরেশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত মোট ৮২৩ কোটি ৭৯ লাখ ছয় হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এরমধ্যে চলতি অর্থবছরেই বরাদ্দ হয়েছে ২৬ কোটি টাকা। চার বছরে এত টাকা বরাদ্দের পরও সামান্য বৃষ্টিতে নগরে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়ছেন বাসিন্দারা।

রেডিওটুডে নিউজ/জেএফ

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের