পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, আমলারা স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের গলায় রশি বেঁধে ঘোরান। তাদের কাছে জনপ্রতিনিধিদের কোনো মূল্য নেই। সরকারের কাছে আমলারা বেশি গুরুত্বপূর্ণ এমন দাবি করে সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধীদলের একাধিক সংসদ সদস্যের বক্তব্যের জেরে একথা বললেন তিনি।
রবিবার (২৬ জুন) ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় বাজেটে স্থানীয় সরকারের জন্য বরাদ্দ ও বাস্তবায়ন শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সচিবালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যানকে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। বর্তমানে আমলাদের কাছেই স্থানীয় সরকারের প্রাণভোমরা। ভবিষ্যতেই এর ফলাফল দেখা যাবে।
এম এ মান্নান বলেন, ১০০ টাকা বরাদ্দ পাওয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আগে নিজেদের ২০ টাকা থাকার প্রমাণ দেখাতে হয়। এভাবেই গলার মধ্যে নানা ধরনের রশি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সোজা পথ রেখে বাঁকা পথে যান। সচিবালয়ের বারান্দায় কিংবা বাইরের চা দোকানে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা ও দেন-দরবার হয়। তারপর সেখানে আমলারা কিছু পান।
পরিকল্পনামন্ত্রীর দাবি, স্থানীয় সরকারের প্রাণভোমরা আমলাদের কাছে থাকায় বর্তমান ব্যবস্থায় স্থানীয় সরকারই কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্বল বর্ধিতাংশ। এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
এম এ মান্নান বলেন, আমলারা জাতীয় সংসদে পাস হওয়া বাজেটের টাকা বরাদ্দ দেন। বরাদ্দের সময়ে তারা নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী কাউকে ৫ কোটি দিয়ে দেয়, আবার কাউকে এক টাকাও দেয় না। কোনো কোনো প্রকল্প রাতারাতি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলেও কোনো কোনো প্রকল্প ছুঁয়েও দেখা হয় না। এ ব্যবস্থায় পরিবর্তন না এলে দিনের পর দিন জনপ্রতিনিধিদের ঘুরতেই হবে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত এ সভায় গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের চেয়ারপারসন কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ ভার্চ্যুয়ালি সভাপতিত্ব করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
রেডিওটুডে নিউজ/এমএস