রাজধানীর একটি কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে
মাদারীপুরের জেরিন শবনম। শুক্রবার রাজধানীর একটি কেন্দ্রে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। তবে তার কাছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পরীক্ষার প্রবেশপত্রও রয়েছে। একইদিনে দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় বাধ্য হয়েই একটিকে ছাড়তে হয়েছে তাকে। শুধু শবনমই নন তার মতো এমন অবস্থা হাজার হাজার চাকরি প্রত্যাশীর।
কেননা একইদিনে রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে ১৩ টি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় কেউই একাধিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না। অথচ এসব পরীক্ষাকে নিয়ে অর্থ, সময় আর স্বপ্ন বিনিয়োগ করেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) সকাল এবং বিকেল মিলিয়ে সরকার নিয়ন্ত্রিত ১৩টি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে। এর মধ্যে সকালের পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, পরিসংখ্যান ব্যুরো, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, সমবায় অধিদপ্তর, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন, ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ, সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, চট্টগ্রাম বন সংরক্ষকের কার্যালয় এবং বাংলাদেশ ক্যাডেট কলেজসমূহের পরীক্ষা।
এর মধ্যে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের পরীক্ষা সকালের পর বিকেলেও অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া বিকেলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আরও কয়েকটি পদের নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, একইদিনে একাধিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় তারা একদিকে যেমন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না কোনটায় অংশ নিবেন। অন্যদিকে তারা মনে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে মনে করছেন ছেড়ে দেওয়া পরীক্ষায় অংশ নিলে হয়তো টিকে যেতেন, এমনটা ভেবে মন খারাপ হচ্ছে। এ অবস্থায় তারা মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
এদিকে একই দিনে এতোগুলো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আয়োজক কেন্দ্র কর্তৃপক্ষগুলোকেও। এছাড়া পরীক্ষায় পরিদর্শনে দায়িত্বরতদেরও বেগ পেতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঠিক সমন্বয়ের অভাবে পরীক্ষার এমন চাপ পড়ছে। অথচ একটু দায়িত্ব নিয়ে সমন্বয় করা গেলে এই জট কমানো সম্ভব।
এ বিষয়ে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমন রায় তালুকদার রেডিওটুডেকে জানান, সকালে তার কলেজে সমবায় অধিদপ্তরের একটি নিয়োগ পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বিকেলে প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি পরীক্ষায়ও তার ডিউটি রয়েছে।
করোনার কারনে দীর্ঘদিন চাকরির পরীক্ষা আটকে থাকায় বর্তমানে পরীক্ষার এমন জট তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা গেলে এ জট কমিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়া কলেজগুলোয় শনিবারে যেহেতু কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হয় না তাই শনিবারেও নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। এমনটি হলে চাকুরি প্রত্যাশীদের ভোগান্তি কমবে।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর একইদিনে ১৯টি চাকরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সে সময়ও নিয়োগ দানকারী দপ্তরগুলোর সমন্বয়হীনতা নিয়ে জোর বিতর্ক ওঠে। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে দপ্তরগুলো আলাদা আলাদা নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে অতিদ্রুত সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে একটি সমন্বয় সেল করে যাতে আগামীর নিয়োগ পরীক্ষাগুলো নেওয়া হয় সে বিষয়ে জোর দাবি জানাচ্ছেন ভুক্তভোগী ও অভিভাবকরা।
রেডিওটুডে নিউজ/এমএস