বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) নিশ্চিত করেছে, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির সময় যথেষ্ট সমর্থন ও কারিগরি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ডব্লিউটিওর উপ-মহাপরিচালক শিয়াংচেন ঝাং বাসসকে দেওয়া এক অনলাইন সাক্ষাৎকারে বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশ ডব্লিউটিও’র কারিগরি সহায়তা পাবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ডব্লিউটিও’র কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পরিকল্পনার আওতায় প্রদত্ত বহুবিধ কার্যক্রম থেকে উপকৃত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ডব্লিউটিও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উন্নয়নশীল অর্থনীতির বাণিজ্য সক্ষমতা জোরদার করে।
এনহ্যান্সড ইন্টিগ্রেটেড ফ্রেমওয়ার্ক (ইআইএফ) প্রসঙ্গে ডব্লিউটিও’র উপ-মহাপরিচালক জানান, বাংলাদেশ ইআইএফ-এর একটি প্রধান সুবিধাভোগী, যা এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে বৈশ্বিক বাণিজ্যে আরও সক্রিয় অংশগ্রহণে সহায়তা করতে বিন্যস্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইআইএফ বর্তমানে তৃতীয় ধাপে রূপান্তরিত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশ আরও পাঁচ বছর ইআইএফ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।
ইআইএফ-এর সহায়তায় বাংলাদেশ সফলভাবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সক্ষমতা বাড়িয়েছে এবং তৈরি পোশাক খাতকে মূল্য শৃঙ্খলে উন্নীত করতে বৈচিত্র্য আনার কৌশল তৈরি করেছে বলে জানান তিনি ।
আর্থিক সহায়তার বিষয়ে শিয়াংচেন ঝাং বলেন, বাংলাদেশ ডব্লিউটিওর ‘এইড ফর ট্রেড ইনিশিয়েটিভ’-এর একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধাভোগী, যা উন্নয়নশীল অর্থনীতিকে বাণিজ্য সক্ষমতা জোরদারে সহায়তা করে।
২০০৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ডব্লিউটিওর ‘এইড ফর ট্রেড ইনিশিয়েটিভ’-এর শীর্ষ দশ সুবিধাভোগীর মধ্যে ছিল এবং এ সময়ে দেশটি ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ডব্লিউটিও সংক্রান্ত শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো বজায় রেখেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটে (বিএফটিআই) একটি ডব্লিউটিও রেফারেন্স সেন্টার পরিচালনা করছে। এটি নথি ও বাণিজ্যু সম্পর্কিত তথ্যের প্রবেশাধিকার প্রদান করে।
তবে ঝাং বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের জন্য একটি প্রধান বিবেচ্য বিষয় হবে ডব্লিউটিওতে তার সম্পৃক্ততার কৌশল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এতদিন মূলত এলডিসি গ্রুপের অংশ হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে। উত্তরণের পর দেশটিকে তার পদ্ধতি মানিয়ে নিতে হবে। উত্তরণের পর বাংলাদেশকে বিভিন্ন স্তরের উন্নয়নশীল ডব্লিউটিও সদস্যদের সঙ্গে কৌশলগত জোট গঠনে মনোযোগ দিতে হবে।
বাংলাদেশ ১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য। দেশটি ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা তার বাণিজ্য নীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ বয়ে আনবে।
বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক পরিচালনায় বৈশ্বিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ ও সহজীকরণে কাজ করা জেনেভা ভিত্তিক আন্তঃসরকারি সংস্থা ডব্লিউটিও ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে এবং প্রতিযোগিতামূলক থাকতে নতুন কৌশল অন্বেষণ করছে। যেমন- রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ এবং আঞ্চলিক চুক্তি— রিজিওনাল কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি)-এ যোগদানের সম্ভাবনা।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

