যানবাহন না থাকায় ভোগান্তিতে মানুষ
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় রাজধানী ঢাকা অন্যান্য জেলার সাথে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। লকডাউনের বিধিনিষেধ পালনে পুলিশকে কড়া অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। ঢাকার পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় সার্বিক কর্মকাণ্ড ও চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। তার মধ্যে মানিকগঞ্জের ওপর দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর যানবাহন চলাচল করে। এর প্রভাব পড়েছে ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ গাবতলীতে। আমিনবাজার ব্রিজের ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
যাদের একান্ত অফিসে আসা প্রয়োজন তারা পয়ে হেঁটেই গন্তব্যে রওয়ায় দেন। ব্রিজের উভয়পাশে আটকে দেয়া হয় যানবাহন। গাবতলীতে আটকে দেয়া হয় ঢাকার অভ্যন্তরীণ গণপরিবহন সহ অন্যান্য পরিবহন। ব্রিজের অপর পাশে আমিনবাজারে আটকে দেয়া হয় সাভারের বাসসহ অন্যান্য পরিবহন।
বুধবার (২৩ জুন) সকাল থেকে বিকেল অবধি ওই এলাকায় দেখা যায় মানুষের ঢল। বেশিরভাগ মানুষই পায়ে হেটে ঢাকায় প্রবেশ করছেন। তাদের মধ্যে অফিসগামী মানুষের সংখ্যাই বেশি, যারা মূলত সাভারে থাকেন। এছাড়া রয়েছেন পোশাককর্মী। তাছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকে ঢাকার পথে আসছেন চিকিৎসা করাতে আসা রোগী। বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়া ঢাকার বাসিন্দারা। বাইরের জেলাগুলো থেকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ঢাকায় আসছেন অনেকেই। ফলে যাতায়াত খরচ হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
হোসেন আলী নামে একজন কৃষক বলেন, তিনি গাইবান্ধায় কৃষিকাজ করেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে ঢাকায় এসেছেন। সঙ্গে ছিল স্ত্রী ও বাচ্চা এবং একটি চালের বস্তা। সবাইকে নিয়ে দল বেঁধে হাঁটছিলেন তিনি।
আমিনবাজার ব্রিজ পার হওয়ার সময় তিনি বলেন, বাসে করে গাইবান্ধা থেকে মির্জাপুর আসতে একটি টিকিটের জন্য ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে। এরপর চন্দ্রা এলাকায় এসেছি ৩০০ টাকা দিয়ে। সেখান থেকে নবীনগর এসেছি ৪০০ টাকায়। নবীনগর থেকে আমিনবাজার ব্রিজের গোড়া পর্যন্ত লেগুনায় এসেছি ৩০০ টাকায়। আর চালের বস্তা আমিনবাজার ব্রিজ পার করাতে লেগেছে ২০০ টাকা। হোসেনের মতো অনেক পথচারী এধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান।হঠাৎ সব বন্ধ না করে দিয়ে তিন–চার দিন আগে ঘোষণা দিলে ভোগান্তিটা হতো না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাবতলীতে নির্দিষ্ট স্থানে দায়িত্ব পালন করছে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু যেসব যানবাহন সেতু পার হচ্ছে, সেগুলো খুব একটা চেক করতে দেখা যায়নি। সার্জেন্ট মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম আমিনবাজার প্রান্তে দায়িত্ব পালনকালে বলেন, আমরা চেক করছি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ চিকিৎসার কথা বলছে। মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল—এগুলোই চলাচল করছে বেশি।