সরকারি চাকুরি দেয়ার নামে প্রতারণা করার অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যদের অভিযানে প্রতারক চক্রের প্রধানসহ ৬ সদসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পিবিআই এ ক্লু উদঘাটন করেছে।
রোববার পিবিআই সদর দপ্তর থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। গ্রেফতারকৃতরা পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে নানা তথ্য দিয়েছে। গ্রেতারকৃতরা হলেন, অভিযুক্ত ফিরোজ ওরফে শাহরুখ ইসলাম, আব্দুল কুদ্দুস, মাইনুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, তৌকির আহমেদ ও কফিল উদ্দিন চৌধুরী।
পিবিআই জানায়, সংঘবদ্ধ এ প্রতারক চক্রের সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরো প্রতারকসহ প্রতারক তথ্য অফিসার, স্বাস্থ্য বিভাগ, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্র, প্রধান কার্যালয়ের নামে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতিষ্ঠানের ই-মেল নম্বর রয়েছে। প্রতারক চক্র মেইল আইডির মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে গত ২৮ জুন সন্ধ্যায় মামলার বাদি উক্ত প্রতিষ্ঠানে বায়োডাটা মেইল করে।
গত ২৯ জুন সকাল ৮টার দিকে অভিযুক্তরা মামলার বাদিকে মোবাইল নাম্বারে এসএমএস পাঠিয়ে জানায় তাকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্রের জেলা প্রোগ্রাম অফিসার হিসাবে নির্বাচিত (নিয়োগ) করেছেন। তথ্য অফিসারের ফোন হতে একটি বিকাশ নাম্বার দেয় এবং উক্ত নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে ১৯শ' ৪০ টাকা দিতে বলে। যে টাকা দিচ্ছে তা প্রথম মাসের বেতনের সঙ্গে ফেরত দেয়া হবে। টাকা পাঠানোর পর আসামীরা একটি মানি রিসিট, এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার এবং চূড়ান্ত নির্বাচিত ফরম ই-মেইল করে। চাকুরি প্রার্থী তাদের কথামতো চূড়ান্ত নির্বাচিত ফরম পূরণ করে আসামীদের দেয়া ই-মেইলে পাঠায়।
গত ৩০ জুন ডিজিটাল আইডি কার্ড ও নিয়োগ পত্র দেয়ার কথা থাকলেও আসামীরা মোবাইল ফোন থেকে চাকুরি প্রার্থীর ফোন দিয়ে বিনামূল্যে ল্যাপটপ এবং মেডিকেল ইকুইপম্যান্ট দেয়ার জন্য ভ্যাট বাবদ আরো ৪ হাজার ৮০ টাকা দাবি করে। তখন সে বুঝতে পারে প্রতিষ্ঠানটি ভূয়া, তারা একটি প্রতারক চক্র। পরবর্তীতে আসামীদের মোবাইল ফোন নাম্বারে ফোন দিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা চাকুরি প্রার্থীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।
আসামীরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্র, সুখি পরিবার, মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র, এ্যাপোলো কনজিউমার প্রোডাক্টসহ বিভিন্ন ভূয়া প্রতিষ্ঠানে লোভনীয় বেতনে চাকুরীর ভূয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে। প্রতারক চক্র কৌশলে বিভিন্ন ধাপে চাকুরী প্রার্থীর ট্রেনিং, ল্যাপটপ, মেডিকেল সামগ্রী, যাতায়াতসহ বিভিন্ন অজুহাতে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা দাবি করে। সহজ সরল প্রার্থীরা অনেকেই প্রতারণার বিষয়টি বোঝার পূর্ব পর্যন্ত তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে থাকে। উক্ত পেশাদার অপরাধী চক্রের প্রতারকরা চাকুরি প্রার্থীকে প্রতারিত করার জন্য সকল অপরাধ পরস্পর সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম দায়িত্ব ভাগ করে সম্পন্ন করে।
আসামীগণ ও তাদের অপরাধী চক্রের অন্যান্য সদস্যরা পরস্পর যোগসাজশ ও সহযোগীতায় ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইনে প্রচার করে সিভি সংগ্রহ, ভূয়া নিয়োগ ফরম, আইডি কার্ড ও মানি রিসিট তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্নসাৎ করার অপরাধ করে বাংলাদেশের চাকুরী প্রার্থী অসহায় ব্যক্তিদের আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতি সাধন করে আসছে।
রেডিওটুডে নিউজ/ইকে/এসআই