আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসে দেশের দুর্নীতির সার্বিক প্রভাব ও বিএনপির অতীত সাফল্যের কথা তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার এই ফেসবুক পোস্টে তিনি এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, “দুর্নীতি কীভাবে বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দিচ্ছে—তা বুঝতে দূরে যাওয়ার দরকার নেই। মেধার ভিত্তিতে চাকরি খুঁজতে বের হওয়া একজন গ্র্যাজুয়েট, মাসের পর মাস ধরে একটি সাধারণ সরকারি সেবা পেতে হিমশিম খাওয়া কৃষক, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে তরুণের পরিবারের দুর্ভোগ বা ব্যবসা বাঁচাতে ঘুষ দিতে বাধ্য উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতাই বাস্তবতার চিত্র দেখায়।”
তারেক রহমান বলেন, খাবারের দাম বৃদ্ধি, মানসম্মত শিক্ষা না পাওয়া, সড়কে নিরাপত্তাহীনতা—এসবের পিছনেও রয়েছে একই কারণ: দুর্নীতি। তিনি মনে করিয়ে দেন, বাংলাদেশ বহু যুগ ধরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে, এবং বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এ লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছিল।
তিনি জানান, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন, যা অনিয়ম কমাতে ভূমিকা রাখে। পরে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকারি প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন, কঠোর আর্থিক আইন, শক্তিশালী অডিট ব্যবস্থা ও স্বচ্ছ ক্রয় নীতিমালা চালু হয়।
তারেক রহমান মনে করিয়ে দেন, ২০০৪ সালে গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ছিল বাংলাদেশের জবাবদিহিতামুখী প্রশাসনের বড় অগ্রগতি। বিশ্বব্যাংক, এডিবি এসব পদক্ষেপকে স্বীকৃতি দিয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি। টিআইবির জরিপ উদ্ধৃত করে বলেন, ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে জনগণ নিজেরাই দুর্নীতি কমার প্রবণতা অনুভব করেছে।
বিএনপির অতীতে নেওয়া বড় পদক্ষেপগুলোর মধ্যে তিনি উল্লেখ করেন—
১। শক্তিশালী অর্থ ব্যবস্থাপনা ও মানি লন্ডারিংবিরোধী আইন
২। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রভিত্তিক স্বচ্ছ ক্রয় নীতি
৩। টেলিকম, মিডিয়া, বিমান পরিবহনসহ উন্মুক্ত বাজারনীতি
৪। প্রশাসনে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ
তারেক রহমান দাবি করেন, “দুর্নীতি কমানোর ধারাবাহিক রেকর্ড একমাত্র বিএনপিরই আছে।”
তিনি আগামী দিনের দুর্নীতি দমন পরিকল্পনাও তুলে ধরেন—
১। আদালত, দুদক, নির্বাচন কমিশন ও সরকারি সেবায় পূর্ণ স্বাধীনতা
২। উন্মুক্ত দরপত্র, সম্পদ বিবরণী ও রিয়েল-টাইম অডিট
৩। আধুনিক পুলিশিং ও দ্রুত বিচার ব্যবস্থা
৪। সব লাইসেন্স–জমি–পেমেন্ট অনলাইনে এনে ঘুষের অবসান
৫। হুইসলব্লোয়ারদের পূর্ণ সুরক্ষা
৬। শিক্ষা ব্যবস্থায় সততা ও নৈতিকতা পাঠ
৭। ডিজিটাল ব্যয় নজরদারিতে শক্তিশালী আর্থিক পর্যবেক্ষণ
তিনি বলেন, “বহু বছরের অব্যবস্থাপনার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হবে। তবে ইতিহাসই বলে—সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জনগণের সমর্থন মিললে পরিবর্তন অসম্ভব নয়। জনগণ দায়িত্ব দিলে বিএনপি আবারও সেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।”
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

