মঙ্গলবার,

১৬ এপ্রিল ২০২৪,

৩ বৈশাখ ১৪৩১

মঙ্গলবার,

১৬ এপ্রিল ২০২৪,

৩ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

মাটি কেটে সংসার চালান ইউপি সদস্য ববিতা

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

Google News
মাটি কেটে সংসার চালান ইউপি সদস্য ববিতা

ছবি সংগৃহীত

প্রথমবার হারলেও দ্বিতীয়বারে বিপুল ভোটে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এখন তিনি পাবনার চাটমোর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য। তবে সংসার চালাতে এখনো কাটছেন মাটি। দীর্ঘ দেড় দশকের এই পেশা এখনো তার জীবীকার একমাত্র অবলম্বন।

সংগ্রামী এই নারীর নাম ববিতা খাতুন। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। শপথও নিয়েছেন ইতোমধ্যে। তিনি মূলগ্রাম ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের জায়দুল ইসলামের স্ত্রী।

জানা গেছে, আজ থেকে ১৫ বছর আগে অভাব মেটাতে তিনি মূলগ্রাম ইউনিয়নের স্থানীয় সরকার প্রকৌশলীর অধীনস্ত পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করার (আরইআরএমপি-৩) কাজ নেন। সেই থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে এ কাজ করে আসছেন তিনি।

স্বামী পরিত্যক্তা ববিতার একটি ছেলে থাকলেও বিয়ে করে আলাদা থাকে সে। সংসারে তার একটি ছোটো বোন রয়েছে।

ইউপি সদস্য ববিতা খাতুন বলেন, আমার মা একবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরে যান। পরের বার নির্বাচনে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যাই। এবার আবার নির্বাচনে দাঁড়ায়। জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছেন। নির্বাচনে আমি কোনো টাকা-পয়সা খরচ করতে পারিনি। গ্রামের মানুষ সহযোগিতা করেছেন। তারা সবাই এক জোট হয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি বলে অনেক বড় কিছু হয়ে গেছি সেটা আমি মনে করি না। জীবিকার জন্য আমাকে কাজ করতেই হবে।

তিনি আরও বলেন, এলাকার মানুষের প্রয়োজন হলে এবং পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান সাহেব খবর দিলে আমি পরিষদে যাই। পরিষদের কাজ শেষ হলে আবার কাজে যোগদান করি। মানুষ আমাকে অনেক আশা নিয়ে ভোট দিয়েছে। আমি গরিব, অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ বলেন, মেয়েটা অনেক পরিশ্রমী। গত নির্বাচনে এলাকায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী বেশ টাকাওয়ালা হওয়ায় সে হেরে যায়। দারিদ্র্যতার কারণে সে মাটি কাটার কাজ করে। আমরাও পরিষদের পক্ষ থেকে বলেছি, তুমি তোমার কর্ম করো, বিশেষ প্রয়োজনে কিংবা দিনে একবার পরিষদে আসলেই হবে।

মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম বকুল বলেন, সে আমার পরিষদের একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাকে ব্যক্তিগতভাবে আমি মাটি কাটার কাজ না করতে বলেছিলাম। সে বলেছে, যতদিন পর্যন্ত পরিষদ থেকে কোনো বেতন/ভাতা না পাবে ততদিন সে এই কাজ করবে। তবে তাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে ও পরিষদ থেকে সহযোগিতা করা হবে। 

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) সৈকত ইসলাম বলেন, ইউপি সদস্যে হয়েও মাটি কেটে জীবনযাপন করা সত্যি অবাক করার মতো ঘটনা। বিষয়টি আমি খোজঁখবর নিয়ে দেখি। তার জন্য ভালো কিছু করা যায় কি না।

রেডিওটুডে নিউজ/এমএস

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের