ম্যাচের শুরুর দুই মিনিটে ইতালির পোস্টে গোল ইংলান্ডের। যা ইউরোর ফাইনালের ইতিহাসে দ্রুততম গোল। সমর্থকেরা ভেবেছিলেন ১৯৬৬ সালে প্রথম বারেরমত বিশ্বকাপের যে ট্রফি জিতেছিল ইংল্যান্ড। তাদের আরেকটি ট্রফির জন্য যে অপেক্ষা, তার মনে হয় অবসান হতে যাচ্ছে ওয়েম্বলিতে ইউরোর ফাইনাল জয়ের মাধ্যমে।
এমন গোলে পিছিয়ে পড়ে ইতালি শোধ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু খেলার প্রথমার্ধের স্বাগতিকদের গোলকিপার পিকফোর্ডকে বড় কোন পরীক্ষায় সেভাবে ফেলতে পারেনি ইতালির আক্রমনভাগ। ৮ মিনিটে ইনসিনিয়ের ফ্রি-কিক ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। ৩৫ মিনিটে চিয়েসার শট দূরের পোস্ট দিয়ে গেলে হতাশই হতে হয়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে তাদের আরও একটি প্রচেষ্টা ইংল্যান্ডের রক্ষণে বাধা পেলে আর গোল পাওয়া হয়নি। প্রথমার্ধে পিছিয়েই থাকতে হয় আজ্জুরিদের।
এই ব্যবধান অবশ্য বিরতির পর আর থাকেনি। ইতালি ম্যাচে ফিরতে তখন মরিয়া। একের পর এক আক্রমণ করে তটস্থ ইংলান্ডের রক্ষনভাগ। পরিস্থিতি এমন দাড়ালো যে গোল পরিশোধ সময়ের ব্যাপার হয়ে দাড়ালো। এসময়ে ইনসিনিয়ে তো দুটো সুযোগ হারান। ৫০ মিনিটে নেওয়া ফ্রি-কিকটি ক্রস বারের বাইরে দিয়ে যায়। ৭ মিনিট পর নাপোলির এই ফরোয়ার্ডের শট গোলপিকার পিকফোর্ড প্রতিহত করেন। ৬২ মিনিটে চিয়েসার শট গোলকিপার ঝাপিয়ে পড়ে রুখে দিয়ে দলকে ম্যাচে রাখেন।গোলও পেলো আজ্জুরিরা দ্বিতীয়ার্ধের ২২ মিনিটে।
ইনসিনিয়ের কর্নারে ভেরাত্তির হেড সাইড বারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে পোস্টের সামনে থাকা লিওনার্দো বোনুচ্চি লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি। গোলকিপার পিকফোর্ড চেষ্টা করেও দলকে গোল খাওয়া থেকে রুখতে পারেননি। এরপরও আক্রমন আর প্রতি আক্রমনে ম্যাচের উত্তেজনা বাড়তে থাকে কিন্তু নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোল করতে পারেনি কোন দলই। খেলা গড়াই অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও হয়নি কোন ফয়সালা।
ট্রাইবেকারে হয় ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারন। সেখানেই ম্যাচের হিরো ইতালির গোলরক্ষক দোনারুম্মা।ইংল্যান্ডের পাঁচটি শটের দুটি রুখে দিয়ে দলকে ট্রফি জিততে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। ইংল্যান্ডের হয়ে কেইন ও মেগেুয়েরে লক্ষ্যভেদ করেছেন। রাশফোর্ডের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। সান্চো ও সাকোর শট গোলকিপার রুখে দেন। বিপরীতে ইতালির বেরার্দি, বেনোচ্চি ও বার্নাডোস্কি গোল করেছেন। বেলোত্তি ও জর্জিনহোর শট ইংলিশ গোলকিপার পিকফোর্ড রুখে দিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি।
১৯৬৮ সালে প্রথম ইউরোর ট্রফি জিতেছে ইতালি। এরপর দুইবার ফাইনারে উঠলেও রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। এবার বহু বছর পর শিরোপা খরা ঘুচলো আজ্জুরিদের। রবার্তো মানচিনির অধীনে দল যে বদলে গেছে, তারই প্রমান মিললো ফাইনাল জয়ের মাধ্যমে।এর আগে উৎসবের মেজাজে সেজেছিল লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে সমাপনি অনুষ্ঠানও হয়েছে। মাঠেই ট্রফি ঘিরে নেচে-গেয়ে দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা ছিল দেখার মতোই।
ইংল্যান্ড দলে আজ একটি পরিবর্তন ছিলো। কোচ সাউথগেট ট্রিপিয়েরকে একাদশে ফিরিয়েছেন। সাকার জায়গা হয়েছে সাইড বেঞ্চে। ৩-৪-২-১ ছঁকে নেমে ইউরোর প্রথম ফাইনাল খেলতে নেমে গোল পেয়েছে। বিপরীতে ১৯৬৮ চ্যাম্পিয়ন ইতালি আগের একাদশেই ভরসা রেখে খেলেছে। ৪-৩-৩ ছঁকে বল দখলে এগিয়ে ছিল।
রেডিওটুডে নিউজ/এমএম/এসআই/ইকে