
অন্তর্বর্তী সরকারের মাথা থেকে নিচ পর্যন্ত পচন ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আওয়ামী লীগ যা ক্ষতি করেছে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করবে। সুতরাং নির্বাচন অবশ্যই দরকার।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের সময় শেষ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। মির্জা আব্বাস বলেন, ৯ মাসে নির্বাচন দিতে পারেনি, পারবেও না। সময় শেষ, আপনারা আপনাদের ব্যবস্থা নিন। একটি অংশ আজকে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় না।
বুধবার নয়াপল্টনে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন (ভার্চুয়ালি) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বক্তব্যে মির্জা আব্বাস বলেন, তরুণদের এই আন্দোলন আমাদের দারুণভাবে আন্দোলিত করেছে। এই বয়সে আমরা এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বেগম খালেদা জিয়াকে তিন বারের প্রধানমন্ত্রী করেছিলাম। আপনারাও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আবারও দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গণমানুষের আকাঙ্ক্ষিত আস্থার একটি প্রতীক ছিল সরকার। কিন্তু ৯ মাসের কার্যক্রমে আমরা কিছু পাই নাই। শুধু পেয়েছি অবজ্ঞা। এ দেশের মানুষকে সরকার অবজ্ঞা করছে। এই সরকারের মধ্যে যারা আছে, আমি বলি এই সরকার ঔপনিবেশিক সরকার। এই সরকারের মধ্যে যারা আছে অর্থাৎ ৯০ ভাগই এদেশের নাগরিক নয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, আন্দোলন করল ছাত্র-জনতা, আর উনারা ঘাড়ে চেপে বসেছেন। আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। উনারা বললেন- সংস্কার করে নির্বাচন দেবেন। এই নয় মাসে যা পারেননি, নয় বছরেও পারবেন না, ৯০ বছরেও পারবেন না।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটা ব্যবস্থা করেন। কী ব্যবস্থা করবেন সেটা আপনারা ভালো জানেন।
তিন বলেন, আমি একটা মিটিংয়ে প্রশ্ন করেছিলাম সেন্টমার্টিন, সাজেকে কী হচ্ছে? সরকার এটা একটু আমাদের কাছে স্পষ্ট করুক। আজও সরকার স্পষ্ট করেনি। আজকে করিডর নিয়ে কথা হচ্ছে। করিডোরে লাভ কী, লস কী সেটা দেখার দরকার নেই? আমরা যেমন ছিলাম তেমন থাকতে চাই না। এরচেয়ে বেশি কিছু আমাদের দাবি নেই। করিডোরের কোনো প্রশ্নই আসে না।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দিচ্ছেন। উনি বলেছেন, ভালো মানুষের হাতে দিতে হবে। আমরা বুঝি আপনারা কী করছেন। এদেশের মানুষকে বোকা ভাববেন না। স্টারলিঙ্ক ছাড়া চলেছি, ওয়াইফাই ছাড়াও চলেছি। দেশ ভালোই ছিল। স্টারলিঙ্ক আনছেন কার জন্য? আনছেন আরাকান আর্মির জন্য। করিডোর কার জন্য, এখান দিয়ে আরাকান আর্মির মাল-মশলার জন্য। সেন্টমার্টিন কার জন্য, বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু একজন তরুণ বেঁচে থাকলেও দেশের ভৌগলিক অখণ্ডতা বিঘ্নিত হতে দেব না। কেউ কেউ বলছেন- বাংলাদেশের মানচিত্র পরিবর্তন হবে। আমি জানতে চাই কী ধরনের পরিবর্তন হবে? ছোট হবে না বড় হবে।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ওদের কাজকর্ম, কথাবার্তায় দেশপ্রেমিক মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার হয়। আমরা যখন নির্বাচনের কথা বলি তখন তারা সংস্কারের কথা বলে। আমরা কাজের কথা বলি, তখন তারা অপকর্মের কথা বলে। আপনারা কোনো কাজ শেষ করতে পারবেন না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে চান্দাবাজি করছে। বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। আপনারা সতর্ক থাকুন। আমরা আগেই বলেছি যারা চাঁদাবাজি করে তাদের কেন পুলিশ ধরে না।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম