বুধবার,

০৮ মে ২০২৪,

২৫ বৈশাখ ১৪৩১

বুধবার,

০৮ মে ২০২৪,

২৫ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস: বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:২৫, ৮ মে ২০২৩

Google News
আজ বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস: বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ

থ্যালাসেমিয়া এক ধরনের রক্তস্বল্পতাজনিত বংশগত রক্তরোগ। এটি জিনবাহিত রোগ, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। এসব রোগী ছোট বয়স থেকেই রক্তস্বল্পতায় ভোগে। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে-তারা যেহেতু তাদের শরীরে নির্দিষ্ট পরিমাণ রক্ত তৈরি করতে পারে না, তাই অন্যের রক্ত ট্রান্সফিউশন নিয়ে তাদের জীবন চালাতে হয়। এই রোগের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই বাংলাদেশে।

তবে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সেন্টারের মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি ১৪ জনে একজনের থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে আর ৭০ হাজারের বেশি শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর ৬ হাজার শিশু বিভিন্ন রকমের থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। এমন প্রেক্ষিতে আজ সোমবারবিশ্ব  থ্যালাসেমিয়া দিবস। 

এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘থ্যালাসেমিয়া : সচেতন হোন-প্রচার করুন, যত্ন নিন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচিতে দিবসটি পালিত হবে।বিশ্ব  থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মা ও বাবা দুজনই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলে সন্তান থ্যালাসেমিয়ার রোগী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সন্তানের দেহে থ্যালাসেমিয়া ঠেকাতে বিয়ের আগে বর ও কনের রক্ত পরীক্ষা করা জরুরি। কারণ বর ও কনে দুজন থ্যালাসেমিয়া বাহক যদি একে অন্যকে বিয়ে না করে তা হলে প্রতিটি আগত শিশুর শরীরে থ্যালাসেমিয়ার জিন থাকবে না। একই সঙ্গে থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে জনসচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার সাত শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর নতুন করে ৭ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে। থ্যালাসেমিয়া রোগীরা প্রতি মাসে এক থেকে দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে এ রোগীরা রক্তশূন্যতায় মারা যায়।

এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলবিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও শিশু হেমাটোলজি অ্যান্ড অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান ডা. এটিএম আতিকুল ইসলাম সময়ের আলোকে বলেন, থ্যালাসেমিয়া প্রধানত দুই প্রকার। আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বিটা থ্যালাসেমিয়া। রক্তের লোহিত রক্তকণিকায় থাকে হিমোগ্লোবিন, যার কাজ হলো শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করা। ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিনের কারণে লোহিত কণিকার আয়ুষ্কাল কমে যায় এবং লোহিত কণিকাগুলো সহজেই ভেঙে যায়। ফলে শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। মা ও বাবা উভয়ই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে শিশুর থ্যালাসেমিয়ার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়ার উপসর্গগুলো মূলত রক্তস্বল্পতাজনিত উপসর্গ। যেমন ক্লান্তি, অবসাদ, শ্বাসকষ্ট, ফ্যাকাশে ত্বক ইত্যাদি। রক্ত অধিক হারে ভেঙে যায় বলে জন্ডিস হয়ে ত্বক হলুদ হয়ে যায়। প্রস্রাবও হলুদ হতে পারে। তাই থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি। বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে দুজন বাহকের মধ্যে বিয়ে এড়াতে পারলে থ্যালাসেমিয়ার হার কমানো সম্ভব। আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করারও পরামর্শ দেন তিনি।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের