শনিবার,

২৭ এপ্রিল ২০২৪,

১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শনিবার,

২৭ এপ্রিল ২০২৪,

১৩ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

মিয়ানমারের শিশু "জিও" আর স্কুল থেকে বাসায় ফেরেনি

রেডিওটুডে ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ০৯:০৬, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Google News
মিয়ানমারের শিশু

মিয়ানমারের সামরিক শাসনের প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা সেদেশের গৃহযুদ্ধে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। যা ইতিমধ্যে প্রাণ কেড়েছে অনেকের। গেল বছর পহেলা ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভয়াবহ যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। বার্তা সংস্থা বিবিসির ডেটা পর্যবেক্ষণ গ্রুপ এসিএলইডি এর মতে, ফেব্রুয়ারি ২০২১ থেকে জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত মিয়ানমারে প্রায় ৬০০ বার সামরিক বিমান হামলা হয়েছে। এই হামলাগুলোতে স্থানীয় প্রায় ১৫৫ জন নিহত হয়েছে, আর আহত হয়েছে আরও কয়েকশতাধিক।আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে মিয়ানমারের  ৯ বছর বয়সী জিন এনওয়ি পিওর নামের এক শিশুর গল্প তুলে ধরেছে। গত বছরের ১৬ই সেপ্টেম্বরে বিমান হামলায় প্রাণ হারায় শিশুটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর সেদিন স্কুলে যাওয়ার আগে বেশ খুশি ছিলেন জিন। হবেই না কেন নতুন এক জোড়া জুতা উপহার পেয়েছে সে তার চাচা থেকে। জিন তার চাচাকে এক কাপ কফি বানিয়ে দিয়ে নতুন জুতো পরে তার সহপাঠীর সাথে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। হঠাৎ জিনের চাচা দেখে তাদের গ্রামের ওপর সামরিক বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার উড়ছে এবং সেখান থেকে গুলি বর্ষণ শুরু হয়েছে। স্কুলে ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় সামরিক বাহিনীর বিমান হামলা শুরু হয়। প্রাণ বাঁচাতে সবাই এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। সামরিক বাহিনী স্কুলের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে আক্রমণ করতে থাকে। কিছু শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় সাহায্যের জন্য কেঁদে স্কুল ভবনের বাহিরে বের হয়ে আসে। সামরিক বাহিনীর এই আক্রমণে জিন এনওয়ি পিও মারা যায়।

ত্রিশ মিনিটের এই হত্যাযজ্ঞের পর আহতদের হাসপাতালে নেয়ার সময় আবার আক্রমণ শুরু করে সামরিক সৈন্যরা। মিয়ানমার এই হামলার জন্য দুটি রাশিয়ান বিমান অস্ত্র মি-৩৫ এর নাম দিয়েছিল “ফ্লায়িং ট্যাঙ্ক” এবং “ক্রকোডাইলস”। সেই গ্রামের স্কুলের হামলার প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষক বলেন, “আমরা কেবল ক্লাস শুরু করেছিলাম। শিক্ষার্থীরা তাদের বই খাতা বের করছিল। হঠাৎ আতঙ্কিত কণ্ঠে সবার চিৎকার শুনি। পরে হেলিকপ্টারের শব্দ শুনতে পাই এবং সাথে বোমা এবং গুলির শব্দ শুনতে পাই।”

অন্য আরেক শিক্ষক বলেন," বাচ্চারা ভয়ে কান্না শুরু করেছিল। এক পর্যায়ে স্কুলের দেয়াল এবং ছাদ ভেদ করে গুলি এসে বাচ্চাদের লাগতে শুরু করে। তারা রক্তাক্ত অবস্থায় মামা বলে কেঁদে সাহায্য চাইতে থাকে। কিন্তু সেই অবস্থায় আমাদের হাতে কিছু ছিল না।” জিন এনওয়ি পিওর মা বলেন, “আমি হেলিকপ্টারের শব্দ শুনেছিলাম কিন্তু বুঝিনি যে গোলাগুলি শুরু হবে। জিন এর মতো আমার বড় ছেলেও স্কুলে গিয়েছিল। আমি স্কুলের দিকে ছুটে যাই।"

তিনি আরও বলেন,"আমি দেখলাম সেনা সদস্যরা রাইফেল দিয়ে সবাইকে মারছে স্কুলের মাঠে এবং তাদের মাথা মাটির দিকে নামাতে বলছে। যারাই মাথা ওপরে তুলছে তাদের মারছে। আমি ভবনের ভিতরে যেতে চাইলে সেনাবাহিনী আমাকে বাধা দেয়। পরে যাওয়ার অনুমতি পেলে আমি স্কুলের গিয়ে দেখি আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে ডাকছে। আমি তাকে সান্তনা ও অভয় দেবার চেষ্টা করি।"

শুধু জিন এনওয়ি পিও নয় মিয়ানমার এর সেনাবাহিনীর হাতে সেদিন মারা গিয়েছেন আরও অনেকেই। এরআগে বিরোধীদের একটি কনসার্টে বিমান হামলায় বহুজনে প্রাণ যায়

রেডিওটুডে/এমএমএইচ

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের