শনিবার,

২৭ এপ্রিল ২০২৪,

১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শনিবার,

২৭ এপ্রিল ২০২৪,

১৩ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

নানা কৌশলে প্রতারণা

র‌্যাবের অভিযানে ধরা পড়ল শীর্ষ প্রতারক শাহীরুল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০৩:৪১, ২৪ অক্টোবর ২০২১

আপডেট: ০৩:৪৫, ২৪ অক্টোবর ২০২১

Google News
র‌্যাবের অভিযানে ধরা পড়ল শীর্ষ প্রতারক শাহীরুল

শাহীরুল ইসলাম সিকদার

রাজধানীর রামপুরা বনশ্রী এলাকায় অভিযান চালিয়ে শীর্ষ প্রতারক শাহীরুল ইসলাম সিকদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র‌্যাব-৪ সদস্যরা গত শুক্রবার গভীররাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেছে। তার গ্রামের বাড়ি বাক্ষ্রণ বাড়িয়া।

সে নিজেকে কথিত মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড গার্ড সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিচয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। অল্প সময়ে বেশী টাকার মালিক হওয়ার লোভে নানা কৌশলে প্রতারনার আশ্রয় নিয়েছিল।

গ্রেফতারকৃত শাহীরুল ইসলাম সিকদারের বাসা ও অফিস  থেকে ৩টি বিদেশী পিস্তল, একটি শর্টগান, একটি এয়ারগান, একটি রাইফেল, ২৩৭ রাউন্ড গুলি, ৫টি ম্যাগজিন, ৫টি খালি খোসা, ২২টি কার্তুজ, ৪টি চাকু, তিনটি ডামি পিস্তল, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড গার্ড সার্ভিস লিমিটেডের মাধ্যমে চাকরির আবেদন ফরম, চুক্তিপত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই, ব্যানার, প্যাড, স্ট্যাম্প, ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, গোপন ক্যামরা,পাসপোর্ট,ভিজিটিং কার্ড, নেইম প্লেট, বিভিন্ন নামিদামী ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে তোলা ছবি, বুলেট প্রুপ জ্যাকেট, পাসপোর্ট, মানি রিসিভ বই, বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাব হেডকোয়াটার্স থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সোলাইমান হোসেনসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রতারক শাহীরুল ইসলাম সিকদারের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ কাছে চাকরি দেয়ার  নামে প্রতারণার বিষয় অভিযোগ করেন।  উক্ত অভিযোগের পর র‌্যাব-৪ একটি গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত  শুরু করে।  

গোপন তদন্ত ও স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, অভিযুক্ত শাহীরুল চাকরী মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ আত্নসাৎ করেছে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা প্রতারক শাহীরুল সৌখিন পরিবহনে কাজ করার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করে। এরপর প্রতারণা।  ২০০৩ সাল থেকে শুরু করে সিকিউরিটি গার্ড সরবরাহ। এরপর ধীরে ধীরে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিসের নামে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতারণা।

২০১৪ সালে রামপুরা এলাকায় হোমল্যান্ড  সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতারণামূলক কাজ নিয়ে নতুন ভাবে কর্মজীবন শুরু করে। অতি অল্প সময়ে অধিক টাকার মালিক হওয়ার লোভে  সে উক্ত কোম্পানীর নামে প্রতারণামূলক ভাবে অগণিত  মানুষের  কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা  আত্নসাৎ করে আসছিল। এরপর থেকে শাহীরুল  ইসলাম অবৈধ সম্পদের মালিক হতে শুরু  করে। 

প্রতারণার  নানা অভিযোগ আড়াল করতে শাহরুল তার অফিসের ঠিকানা পরিবর্তন করে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিসের পরিবর্তে নিজেকে প্রভাবশালী  হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে একটি বেনামী মানবাধিকার  সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। সে বিভিন্ন সংস্থার  উর্ধ্বতন  কর্মকর্তার নাম রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করছে। এমনকি সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়েও প্রতারণা করত। তার নামে রামপুরা থানায় চাঁদাবাজির মামলাও রয়েছে।

সে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার ও শিক্ষিত বহু নারী ও পুরুষকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ড, ড্রাইভার,কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারি, বিক্রয় কর্মকতা ও লাইনম্যান হিসেবে চাকরি দেয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্নসাৎ করেছে।

প্রতারক শাহীরুল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দেয়ার জন্য চাকরীর চটকদারী বিজ্ঞাপন দিত। প্রার্থীরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদেরকে ভূল বুঝিয়ে জামানত হিসেবে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা জামানত হিসেবে  নিত। আর সরকারি চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। সে নিজেকে শুটিং ক্লাবের  সদস্য পরিচয় দিত বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

এছাড়া ও প্রশিক্ষণ, ইউনিফর্ম ও অন্যান্য খরচ  হিসেবে টাকা নিত। চাকরি না পাওয়া প্রার্থীরা পাওনা টাকা ফেরত চাইলে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে তাদেরকে ভয়ভীতি ও জীবননাশের হুমকি দিত। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের