বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪,

১২ বৈশাখ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৪,

১২ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

শুল্ক কমার পরেও অশান্ত চিনির বাজার

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৬:০২, ১৮ মার্চ ২০২৩

Google News
শুল্ক কমার পরেও অশান্ত চিনির বাজার

রোজার বাকি ৫দিন। প্রতিবারই রোজা আসলে বিশেষ চাহিদা রয়েছে এমন কিছু পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। সাধারণত রমজান মাসে খেজুর,চিনি,তেল,ছোলা এবং পেঁয়াজ এই ৫ টি পণ্যের বিশেষ চাহিদা রয়েছে । বাকি ১১ মাসে যে পরিমান চাহিদা রয়েছে তার প্রায় কয়েকগুন বেশি চাহিদা এই এক মাসে রয়েছে।

যদিও দেশের চিনির বাজার এখনো অস্থিতিশীল। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামেই চিনি কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। এমনকি ২৬ ফেব্রুয়ারি চিনি আমদানিতে যে শুল্ক প্রত্যাহার হয়, তারও কোনো সুফল মিলছে না। ওই সময় আমদানি করা অপরিশোধিত চিনির ওপর থেকে কেজিপ্রতি সাত টাকা এবং পরিশোধিত চিনি থেকে ১০ টাকা শুল্ক প্রত্যাহার হয়। তারপরও বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে। বনশ্রীর রহমান স্টোর নামের এক খুচরা দোকানের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, “গত কয়েক মাস ধরেই চিনি নিয়ে সার্কাস দেখছি। মাঝে তো ৭ দিন চিনি পাইনি। কিন্তু এখন দেখা গেছে ৫০ কেজি অর্ডার করলে ২০ কেজি পাচ্ছি।“ তিনি জানান, গত কয়েক মাস আগে যে চিনি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি করতেন তা এখন বিক্রি করছেন ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।

রাজধানীর রামপুরা ও মালিবাগ বাজারে  দেখা যায়, সেখানে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে ১১৫-১২০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি ব্র্যান্ড ভেদে ১২০-১৪০ টাকা এবং দেশি মিলগুলোর আখের চিনি ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। ফলে গত একমাসের ব্যবধানে কমেনি চিনির দাম। এরমধ্যে আবার খুচরা বাজারে প্রায়ই থাকে চিনির সংকট। ফলে দাম বাড়িয়ে বিক্রেতারা যে যার মতো বিক্রি করেন। অন্যদিকে বেশি দামে চিনি বিক্রি করতে যেন খুচরা বিক্রেতাদের সমস্যা না হয়, সেজন্য কিছু কোম্পানি তাদের প্যাকেটের গায়ে লেখা সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য মুছে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু কোন পক্ষই দোষ নিতে রাজি না । চিনির বাজারে অস্থিরতার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করছেন ব্যবসায়ীরা। মিল মালিকরা বাজার সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। আর বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিলগেট থেকেই তাদের বেশি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে। মৌলভিবাজারের এক পাইকারী দোকানদার জানান,“আমরা যেমন পাচ্ছি ঠিক তেমনই বিক্রি করছি । তবে আমাদের চাহিদা মতো ডিলাররা দিচ্ছেনা এটা সত্য”।

যদিও গত ২৬ জানুয়ারি অপরিশোধিত চিনির আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য বৃদ্ধি এবং ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যয় বিবেচনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে প্রতি কেজি খোলা চিনির মূল্য ১০৭ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির মূল্য ১১২ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স এসোসিয়েশন। এরপরে খুচরা মার্কেটে গত এক মাসেই দাম বেড়েছে ১০ টাকার বেশি। এ বিষয়ে মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ বশির উদ্দিন বলেন, ভ্যাট কমানোর পর মিল থেকে চিনির দাম কমেনি, উল্টো বেড়েছে। এখন সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ডিলারদের কাছে ১০২ টাকা দরে চিনি দেওয়ার কথা মিলগুলোর। তারা ডিওতে সেই দাম লিখছে, কিন্তু আন্ডার ইনভয়েস ১০৫-১১০ টাকা পর্যন্ত দাম নিচ্ছে। প্রসঙ্গত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, দেশে বছরে চিনির চাহিদা ১৮-২০ লাখ টন। রোজায় এ চাহিদা আরও বেড়ে যায়। অথচ দেশে সব মিলিয়ে উৎপাদিত হয় মাত্র ৩০-৩৫ হাজার টন। শুধু রোজার মাসে চিনির চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় আড়াই থেকে তিন লাখ টন। দেশে উৎপাদন না থাকায় চাহিদার বড় অংশই জোগান দেওয়া হয় আমদানির মাধ্যমে।

রেডিওটুডে/এমএমএইচ

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের