শুক্রবার,

২৬ এপ্রিল ২০২৪,

১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুক্রবার,

২৬ এপ্রিল ২০২৪,

১৩ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

লকডাউনে কারখানা চালু সরকারের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২৬, ২ আগস্ট ২০২১

আপডেট: ১৬:০২, ২ আগস্ট ২০২১

Google News
লকডাউনে কারখানা চালু সরকারের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত: মির্জা ফখরুল

লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ করেই রপ্তানিমুখী কলকারখানা খুলে দেয়ার সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘পুরোপুরি আত্মঘাতী’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আপনারা আজকের পত্রিকাগুলোতে দেখেছেন কী ভয়াবহ অবস্থা? কি রকম তুঘলগি কারবার- আগে বলা হলো যে, করখানা খোলা হবে না, ৫ তারিখ পর্যন্তই বন্ধ থাকবে।

আবার হঠাৎ করেই বলা হলো কলকারখানা খোলা হবে। কি করে লোকগুলো আসবে তার কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার দেখা যাচ্ছে, রাত্রি বেলা বলছে যে, না, দুপুর ১২ টা পর্যন্ত গণপরিবহন খোলা থাকবে। আমি কি এমনি বলেছিলাম যে, এগুলো আসতেছে সব হেমায়েতপুর থেকে। আসলেই তো ! সব হেমায়েতপুরের অবস্থা। এটা বদ্ধ উন্মাদনা ছাড়া আমি কিছু দেখতে পাই না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে যে, অযোগ্যতা, দুর্নীতিপরায়নতা এবং আন্তরিকতার চরম অভাবে এসব আত্মহননকারী সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করছে। দিস ইজ টোটালি সুইসাইডাল।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের পত্রিকা দেখে তো আপনার সন্ত্রস্ত হয়ে যেতে হয়। যেভাবে মানুষ আসছে একেবারে গাদাগাদি করে, ঘাড়ের উপর, ঘাড়ের উপরে চড়ে। একবার তাদের ছুটি দিলো সব চলে গেলো। আবার ফিরছে তারা মফস্কল থেকে। এখন তো মফস্বলেই সংক্রমণ সবচেয়ে বেড়েছে। ওইগুলো নিয়ে তারা আবার ফিরে আসছে।

সুতরাং আমরা বুঝতে পারছি যে, কি হতে যাচ্ছে ঢাকাতে। আমরা মনে করি, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতার জন্য সকল দায়-দায়িত্ব নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।

গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। গতকাল শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, সরকারেরে অপরিকল্পিত লকডাউনে জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। বিএনপি অনেকবার বলেছে যে, দিন আনে দিন খায় মানুষ, প্রান্তিক মানুষ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, মাঝি, রিকশা শ্রমিক, ভ্যান শ্রমিকসহ সকল প্রকার নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সহায়তা ও আর্থিক সহায়তা ব্যতিত লকডাউন কখনই কার্য্কর হবে না।

সেজন্যই বিএনপি এসব মানুষদেরকে এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব করেছিলো। সরকার সেদিকে না গিয়ে দলীয় লোকদের আড়াই হাজার টাকা করে প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকৃত দুর্গত মানুষের কাছে এই সহযোগিতা পৌঁছাচ্ছে না। 

উপরন্তু হঠাত করে রপ্তানীমুখী কল কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে কল-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা আরো মারাত্মক ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছে।

একদিকে গণপরিবহন বন্ধ অন্যদিকে কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশে তারা হতবিহবল হয়ে উঠেছে এবং চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। প্রায় সব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। ঢাকার বাইরে এই শ্রমিকরা এবং ঢাকার জনগণ ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ভয়াবহ সংক্রমণের শিকার হবার সম্ভাবনা বাড়ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার অবলীলায় জনগণকে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করছে। একদিকে সরকার বলছে, প্রতি সপ্তাহে ৬০ লক্ষ টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।

অথচ গত ৭ মাসেও ৬০ লক্ষ টিকা দিতে পারেনি। টিকা প্রাপ্তির কোনো নিশ্চয়তা ছাড়াই প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে তারা (সরকার) যা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ব্যতিত কিছুই নয়।

প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা প্রদানের জন্য টিকা প্রাপ্তির উতস সরকার এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রীর টিকা নিয়ে এসব উক্তি এখন হাস্যকর। এগুলো যে ফাঁকা বুলি- এটা বুঝতে আর জনগনের কোনো বাকী নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় ফাঁকা বুলি না আওরিয়ে অবিলম্বে টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরার আহবান জানানো হয়।

সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যার প্রকৃত পরিসংখ্যান না দিয়ে জনগণকে প্রতারণা করতে ‘অসত্য তথ্য’ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরো ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ডা. রফিকুল ইসলাম, তাইফুল ইসলাম টিপু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (ড্যাব) অধ্যাপক হারুন আল রশিদ ও অধ্যাপক আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

রেডিওটুডে নিউজ/এসআই

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের