মঙ্গলবার,

১২ আগস্ট ২০২৫,

২৮ শ্রাবণ ১৪৩২

মঙ্গলবার,

১২ আগস্ট ২০২৫,

২৮ শ্রাবণ ১৪৩২

Radio Today News

তদন্ত সংস্থার কাছে আসিফ মাহমুদের বিস্ফোরক জবানবন্দি

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৯:৪৮, ১২ আগস্ট ২০২৫

Google News
তদন্ত সংস্থার কাছে আসিফ মাহমুদের বিস্ফোরক জবানবন্দি

ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পরপরই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সমন্বয়কারীদের যোগাযোগ চলছিল। পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও মিটিং করা হয়—এমনটাই জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাকে দেওয়া তার লিখিত জবানবন্দিতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নানান দূর্নীতিরি আরও অনেক বিস্ফোরক তথ্য তুরে ধরেছেন তিনি।

জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেখানোর কথা বলে সমন্বয়কদের থেকে জোরপূর্বক ভিডিও বার্তা নেওয়া হয়েছিল।

আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ১৯ জুলাই রাতে গুম হওয়ার আশঙ্কায় গুলশান থেকে স্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করছিলাম আমি। কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় আমাকে সেলুলার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হয়েছিল এবং সেই নেটওয়ার্ক ট্র্যাক করে ডিজিএফআই আমাকে ধরে নিয়ে যায়। ওই রাতেই নাহিদ ভাইকেও গুম করা হয়। 

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘চোখ খুলে নিজেকে একটি অচেনা কক্ষে পাই। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের পতনের পর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘর পরিদর্শনের সময় বুঝতে পারি, আমাকেও সেখানেই রাখা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক তাসনীম খলিলের ভাষ্যমতে, সেটি ছিল তথাকথিত ‘ভিআইপি’ সেল, যেখানে তুলনামূলক ভালো পরিবেশ থাকলেও, আমি ১৯ জুলাই শুক্রবার থেকে ২৪ জুলাই বুধবার পর্যন্ত গুম অবস্থায় ছিলাম। মুক্তির পর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। যেখানে নাহিদ ভাইও চিকিৎসাধীন ছিলেন। সে সময় আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে ছিলাম।’

জবানবন্দিতে আরও বলেন, ‘ওইসময় সরকার কোটা আন্দোলনকারীদের দাবির অনুকূলে রায় ঘোষণা করে। ১৭ জুলাইয়ের পর থেকেই ডিজিএফআই, ইন্টারনাল এফআইএস ব্যুরো ও ডিএমপি-সিটিটিসির কয়েকজন কর্মকর্তা ‘সংলাপের’ চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু এ আলোচনার আড়ালে চলতে থাকে নজরদারি, মোবাইল জব্দ ও আন্দোলন স্থগিতের চাপ।’

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘২৫ জুলাই ভিডিও বার্তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়।’

লোমহর্ষক নির্যাতনের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২৬ জুলাই হাসপাতালে থেকে আমাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। যেখানে ৬ দিন আটক রেখে জোরপূর্বক ভিডিও স্টেটমেন্ট নেয়া হয়। রমনা জোনের ডিসি হুমায়ুন আমাদের পরিবার ও আন্দোলনকারীদের নামে মামলা দেওয়ার হুমকি দেন, আর ভিপি নূরকে সেখানেই মারধরের ঘটনা ঘটে।’

ডিবি কার্যালয়ে অনশন শুরু করলে খবর ছড়িয়ে পরে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। অবশেষে ১ আগস্ট মুক্তি পাওয়ার পর আমরা আন্দোলনের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করি। ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘একদফা’ দাবির ঘোষণা দেই বলেও জানান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।

জবানবন্দিতে তিনি আন্দোলনের শুরুর দিককার কথাও তুলে ধরেন। কীভাবে তারা আন্দোলনে সমন্বয়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। উপদেষ্টা বলেছেন, কীভাবে উত্তাল সেই দিনগুলোতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অস্ত্রধারীদের সামনে সাহস নিয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তারা। এছাড়া আওয়ামী লীগ র‍্যাবকে নিজেদের স্বার্থে সামরিকীকরণ করে ব্যবহার করত বলে দাবি করেন তিনি। সেই সঙ্গে র‍্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগও তোলেন আসিফ মাহমুদ।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের