টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ ১-১ সমতার পর অলিখিত ফাইনালে তথা শেষ টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড রান তাড়া করে জিম্বাবুয়েকে হারালো বাংলাদেশ। সৌম্যর ফিফটি আর মাহমুদউল্লাহ-শামিমদের ব্যাটে স্বাগতিকদের ৫ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজও নিজেদের করে নিল সফরকারীরা।
টস জিতে তাদিওয়ানশে মারুমানিকে নিয়ে ইনিংস ওপেন করতে নামেন মাধেভেরে। দুজনেই দারুণ শুরু পান। শরিফুল ইসলামের তৃতীয় ওভারের শেষ দুই বলে পর পর চার ও ছক্কা হাঁকান মারুমানি।
তাসকিন আহমেদের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে টানা পাঁচটি বাউন্ডারি তুলে নেন মাধেভেরে। তাতে জিম্বাবুয়ের স্ট্রাইক রেট পৌঁছে যায় ১২-তে। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে মারুমানিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
তার মিডল স্টাম্পে থাকা লেংথ বল লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন মারুমানি। ফিরতে হয় বোল্ড হয়ে। ২০ বলে ২টি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে ২৭ রান করেন তিনি। তবে চাকাভা উইকেটে এসেই শটস খেলতে শুরু করেন। তাতে দ্রুতই এক শ পূরণ করে ফেলে জিম্বাবুয়ে।
১২তম ওভারের প্রথম বলে সৌম্যর শিকার হন চাকাভা। বাউন্ডারি লাইনে যাকে ক্যাচে পরিণত করার পুরো কৃতিত্ব মোহাম্মদ নাঈমের। ক্যাচ মুঠোয় পুরে যখন শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারছিলেন না, ঠিক তখনই বলটা ছুড়ে দেন তিনি সতীর্থ শামীম হোসেনের দিকে।
শামীম সেটি তালুবন্দী করতে ভুলে করেননি। চাকাভা ২২ বলে ৪৮ রান করেছেন ৬ ছক্কায়। মাধেভেরের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র ৩১ বলে উপহার দিয়েছেন ৫৯ রানের জুটি।
এরপর সৌম্যর ওই ওভারেই সিকান্দার রাজা এসে শূন্য রানে ফিরে যান। তবে দারুণ ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন মাধভেরে। ৫৬ রানের ইনিংস খেলে সাকিবের বলে ফেরেন তিনি। শেষ মুহুর্তে ঝড়ো ইনিংস খেলে জিম্বাবুয়েকে বড় সংগ্রহ এনে দেন রায়ান বার্ল। তার অপরাজিত ১৫ বলে ৩১ রানের ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে।
হারারাতে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৯৪ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় রোডেশিয়ানরা। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ আর সব মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড।
বড় রান তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেট ও ৪ বল আগেই জয় তুলে নিয়ে টাইগাররা। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টি-টোয়েন্টিতে এটিই সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। এর আগে এই রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের দখলে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে ১৮৪ রান তাড়া করে জিতেছিল পাকিস্তান।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার নাইম শেখ ফিরলেও আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার সাকিবের সাথে গড়েন অর্ধশত রানের জুটি। ১৩ বলে ২৫ রান করে ফেরেন সাকিব। একদিক আগলে সিরিজে দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন সৌম্য। ৪৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে ফিরেন সৌম্য।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ। মাঝপথে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ বলে ১৪ রান করে ফেরেন আফিফ। শামিমকে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন টাইগার অধিনায়ক।
ব্যাটিংয়ে নেমেই ঝড় তোলেন আগের ম্যাচে অভিষিক্ত শামিম। মাহমুদউল্লাহ ১৯তম ওভারে ২৮ বলে ৩৪ রান করে ফিরলেও ১৫ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে ৫ উইকেটের জয উপহার দিয়ে মাঠ ছাড়েন শামিম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে : ১৯৩/৫ (২০ ওভার)
মাধেভেরে ৫৪, চাকাভা ৪৮, বার্ল ৩১* মায়ার্স ২৩
সৌম্য ১৯/২, সাকিব ২৪/১, শরিফুল ২৭/১
বাংলাদেশ : ১৯৪/৫ (১৯.২ ওভার)
সৌম্য ৬৮, রিয়াদ ৩৪, শামীম ৩১*
মুজারাবানি ২৭/২, জংওয়ে ৪২/২
ফল : বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ এবং ম্যান অব দ্যা সিরিজ : সৌম্য সরকার
সিরিজ : বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
রেডিওটুডে নিউজ/এসবি/ইকে/এসআই