রাক্ষসী যমুনা নদী ভাঙনে বিলীন চার শতাধিক ঘরবাড়ি

বৃহস্পতিবার,

৩০ অক্টোবর ২০২৫,

১৫ কার্তিক ১৪৩২

বৃহস্পতিবার,

৩০ অক্টোবর ২০২৫,

১৫ কার্তিক ১৪৩২

Radio Today News

রাক্ষসী যমুনা নদী ভাঙনে বিলীন চার শতাধিক ঘরবাড়ি

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:১৩, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

Google News
রাক্ষসী যমুনা নদী ভাঙনে বিলীন চার শতাধিক ঘরবাড়ি

রাক্ষসী যমুনা নদী ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়ার চর গ্রামের বাসিন্দাদের। গত কয়েক দিন থেকেই অসময়ে যমুনা তিন কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙনে ইতোমধ্যে একটি মসজিদ, প্রায় শতাধিক একর জমি ও চার শতাধিক বসতঘরসহ অনেক স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে তীব্র ভাঙনে ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ কোটি টাকার সোলার প্যানেল, মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিণ মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি মাদ্রাসা, আটটি মসজিদ, ফসলি জমি, বসতঘরসহ সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা। দ্রুত ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে মন্নিয়ার চর গ্রাম। যমুনার ভাঙনে এর আগেও ওই এলাকার বিভিন্ন গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

মন্নিয়া উচ্চ বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, বিদ্যালয় থেকে মাত্র কয়েক শত গজ দূরে নদী। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা না নিলে কয়েক দিনের মধ্যেই বিলীন হয়ে যেতে পারে একমাত্র  ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা না হলে এ অঞ্চলে শিক্ষার মান পিছিয়ে যাবে।

শিক্ষার্থী  শাকিল আহম্মেদ জানায়, এক মাস পর আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা। প্রতিষ্ঠান যদি ভেঙে যায় তাহলে আমাদের পড়ালেখার মারাত্মক ক্ষতি হবে। শাকিল আহম্মেদ মতো একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিশামনি ও শহীদ মিয়া।

দক্ষিণ মন্নিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার খানম বলেন, আমার স্কুল থেকে কয়েকশ গজ দূরে নদীর অবস্থান। এই স্কুলে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। আমরা ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চাই।

বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আকন্দ বলেন, অসময়ে নদীভাঙন আমাদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে গেছে। এখনই যদি ভাঙন ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা, ফসলি জমি ও বসতঘর নদী গ্রাস করে নেবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মমতাজ আকন্দ বলেন, আমার নিজের বাড়ি গত কয়েক মাস আগে যমুনা নদীতে ভেঙেছে। এখন কোনোমতে টিকে রয়েছি। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ফসলি জমিসহ অসংখ্য বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান জানান, ভাঙনের বিষয়টি ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান বলেন, মন্নিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি চরে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নিতে সমীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। সেই সমীক্ষার প্রতিবেদন আমরা খুব দ্রুত প্রেরণ করবো। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে টেকসই কার্যক্রম বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের