
পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পারমাণবিক হামলার হুমকির পর এবার নিজেদের ওড়িশা উপকূল থেকে সফলভাবে দূরপাল্লার শক্তিশালী ব্যালিস্টিক মিসাইল ‘অগ্নি-৫’ এর পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত।
আজ বুধবার (২০ আগস্ট) ওড়িশার চান্দিপুরের ইন্টেগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ (আইটিআর) থেকে মিসাইলটি উৎক্ষেপণ করে ভারত।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে, মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল অগ্নি-৫ এর এই পরীক্ষার মাধ্যমে এর সব কার্যক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত মানদণ্ড যাচাই করা সম্ভব হয়েছে। মিসাইলটি ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) তৈরি করেছে।
পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম অগ্নি-৫ মিসাইলটি পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এটি ভারতের অগ্নি সিরিজের সর্বাধুনিক সংস্করণ এবং একে ১ দশমিক ৫ টনের পারমাণবিক বোমাসহ উৎক্ষেপণ করা সম্ভব। হালকা পদার্থ দিয়ে তৈরি হওয়ায় এর নির্ভরযোগ্যতাও বেড়েছে।
অগ্নি-৫ মিসাইলটি এমআইআরভি (মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলি টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভেহিকল) প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। ফলে একটি মিসাইল থেকে একাধিক ওয়ারহেড ছুড়ে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এছাড়া লক্ষ্যভেদের নিখুঁততা বাড়াতে এতে ব্যবহার করা হয়েছে রিং লেজার জাইরোস্কোপ-ভিত্তিক ইনার্শিয়াল ন্যাভিগেশন সিস্টেম (আরএলজি-আইএনএস) এবং মাইক্রো-ইনার্শিয়াল ন্যাভিগেশন সিস্টেম (এমআইএনজিএস)।
ভারতের নিজস্ব স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন সিস্টেম ‘ন্যাভিক’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জিপিএস এ দুটি সিস্টেমকে আরও কার্যকর করেছে।
মিসাইলটি তিন ধাপের কঠিন জ্বালানি চালিত প্রপালশন সিস্টেমে তৈরি এবং ক্যানিস্টারাইজড প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণ করা যায়। ফলে একে দ্রুত মোতায়েন, সহজে সংরক্ষণ ও অধিক গতিশীলভাবে ব্যবহার করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফ্লোরিডায় এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে দেশটি অস্তিত্বের হুমকিতে পড়লে তারা পারমাণবিক হামলায় বাধ্য হবে। এর পরপরই পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্বও একই ধরনের বক্তব্য দেন। এসব মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় ভারত।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের সেই হুমকির জবাব দিতে এবং নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা প্রদর্শনের অংশ হিসেবেই অগ্নি-৫ মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে নয়াদিল্লি।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম