
বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগ মদদপুষ্ট ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতার অপব্যবহার এখন আর অজানা নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অনিয়মের চিত্র এখন একে একে সামনে আসছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুৎ খাতের ভয়াবহ দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হওয়া থামেনি। এই দুর্নীতির কেন্দ্রে রয়েছে সামিট গ্রুপ, যারা কৌশলে ফার্নেস অয়েলের আমদানিমূল্য বাড়িয়ে দেখিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ বিদেশে পাচার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে।
সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের এক ফেসবুক পোস্টে উঠে এসেছে এসব চিত্র। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, সামিট গ্রুপ পরিচালিত বরিশাল ১১০ মেগাওয়াট, গাজীপুর ১৫০ মেগাওয়াট এবং গাজীপুর ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০১৬ সাল থেকে চালু রয়েছে। এসব কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় ফার্নেস অয়েল সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করে সামিট, এবং চুক্তি অনুযায়ী সিঙ্গাপুরে প্রকাশিত মূল্য তালিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) প্রতি মাসে সামিটকে অর্থ পরিশোধ করে। কিন্তু এখানেই ঘটেছে শুভঙ্করের ফাঁকি।
২০২৪ সালে এই তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফার্নেস অয়েল আমদানির ক্ষেত্রে সামিট বারবার সিঙ্গাপুরের বাজারমূল্যের তুলনায় বেশি মূল্য দাবি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে এক চালানে সিঙ্গাপুরের তালিকাভুক্ত দাম ছিল প্রতি মেট্রিক টন ৪৩৬ ডলার, অথচ সামিট সেটি ৪৬৬ ডলার দেখিয়ে পিডিবি থেকে অর্থ আদায় করেছে।
এই ধরনের অনিয়ম একক নয়—২০২৪ সালে ৩১টি চালানের মাধ্যমে ৬৬,০০০ টনেরও বেশি ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হয়। প্রতিটনে গড়ে ২৯ ডলার করে অতিরিক্ত দামের ভিত্তিতে শুধু এক বছরেই সামিট গ্রুপ প্রায় ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ২৪ কোটি টাকার বেশি পাচার করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম