সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বৈধ ঘোষণার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরেছে, তবে এর গঠন আগের নাকি জুলাই সনদের বর্ণিত কাঠামো অনুযায়ী হবে, তা পরবর্তী সংসদ নির্ধারণ করবে।
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর আজ বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে আনা ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে ১৪ বছর আগে দেওয়া রায় পুরোটাই বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর ও এ-সংক্রান্ত রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের রায়ে মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন, ভোট রাতের পরিবর্তে দিনে হবে এবং মৃত মানুষ ভোট দিতে পারবেন না। দেশ গণতান্ত্রিক মহাসড়কে হাঁটা শুরু করেছে।’
আসাদুজ্জামান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক।
দেশের বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট রায় দেয় কী না- এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কোন রায় রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট, আর কোন রায় আইনি ব্যাখ্যায় দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবে, গণতন্ত্র রক্ষা করবে, মানুষের ভোটাধিকার রক্ষা করবে, আইনের শাসন রক্ষা করবে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্বহাল করবে, তা জাতি বিবেচনা করবে।
তিনি বলেন, আজকের রায়ে আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল হলো। এটা কার্যকর হবে পরবর্তী সংসদ ভাঙার পরের ১৫ দিনের মধ্যে। জুলাই সনদে ভিন্ন ধরনের কথা বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকলে সংবিধানের ৫৮(গ)৩ অনুসারে প্রধান বিচারপতিই কি সরকারপ্রধান হবেন- এই প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় এলে সেটা দেখা যাবে।
পঞ্চদশ সংশোধনী মামলার সঙ্গে এই রায় কোনোভাবে সাংঘর্ষিক হবে কি না- প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছিল। এটা পঞ্চদশ সংশোধনীর ইস্যু। অসৎ উদ্দেশ্যে এই সংশোধনী আনা হয়েছিল। হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে যে রায় দিয়েছেন, সেই অংশটা আপিল বিভাগে চ্যালেঞ্জ হয়নি। যদি চ্যালেঞ্জ হয়ও— আপিল বিভাগের এই রায়টাকে অতিক্রম করবে না। এটা রিভিউয়ের রায়। রিভিউয়ে আপিলের অনুমতি দিয়ে এই রায়টা হয়েছে।
জুলাই সনদের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সংসদের কিছু ক্ষমতা তো থাকবেই। এই রায়ের মাধ্যমে এমন কোনো বিধান আসবে না, যা কোরআন বা বাইবেলিক হয়ে যাবে। ২০ বছর পর যদি মানুষ মনে করে এই ব্যবস্থা পচে-গলে গেছে, গণতন্ত্র সংরক্ষণের জন্য এর চেয়ে ভালো কোনো ব্যবস্থা প্রয়োজন, সেটা অবশ্যই সংসদের বিবেচনায় থাকবে।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

