বৃহস্পতিবার,

১৮ এপ্রিল ২০২৪,

৫ বৈশাখ ১৪৩১

বৃহস্পতিবার,

১৮ এপ্রিল ২০২৪,

৫ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

কারাগার থেকে তুলে নিয়ে ফের চালান, জেল সুপার-ওসির বিরুদ্ধে এজাহার

পীযূষ কান্তি আচার্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ০৭:১০, ২০ জুলাই ২০২১

আপডেট: ০৭:১৬, ২০ জুলাই ২০২১

Google News
কারাগার থেকে তুলে নিয়ে ফের চালান, জেল সুপার-ওসির বিরুদ্ধে এজাহার

মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ও জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন

পুলিশকে টাকা না দেয়ায় জামিন পাওয়া হাফিজ ভূইয়া (২৫) নামে এক যুবককে কারাগারের ভেতর থেকে তুলে এনে আরেক মামলায় জড়ানোর অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন জানিয়ে এজাহার জমা দেয়া হয়েছে।

সোমবার (১৯ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (সদর) আয়েশা বেগমের আদালতে মামলার আবেদন করেন হাফিজের মা রেজিয়া বেগম। হাফিজ জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের দুর্বাজ মিয়ার ছেলে। এজহারভুক্ত বাকি আসামিরা হলেন- জেলা কারাগারের জেলার দিদারুল আলম, ডেপুটি জেলার রেজাউল করিম, সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) সোহরাব আল হোসাইন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাবুল মিয়া ও সুজন কুমার চক্রবর্তী।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুন হাফিজ ভূইয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মধ্যপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। গত ১৫ জুলাই আদালত থেকে হাফিজকে জামিন দিয়ে ওইদিনই কারাগারে সকল কাগজপত্র পাঠানো হয়। কিন্তু ১৫ জুলাই রাত পর্যন্ত কারাগার থেকে বের করা হয়নি হাফিজকে। জামিনের বিষয়টি জানতে পেরে পরদিন (১৬ জুলাই) সদর মডেল থানার
পরিদর্শক (অপারেশন্স) সোহরাব, এসআই বাবুল ও সুজন কারাগারে গিয়ে জেল সুপার ইকবাল, জেলার দিদারুল, ডেপুটি জেলার রেজাউলের সাথে যোগসাজশ করে হাফিজকে তুলে সদর থানায় নিয়ে যায়।

হাফিজকে তুলে আনার বিষয়টি জানতে পেরে তার মা রেজিয়া ও ভগ্নিপতি মন মিয়া থানায় গেলে পরিদর্শক (অপারেশন্স) সোহরাব আটক হাফিজকে ছাড়তে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে হাফিজকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান। পরে সোহরাবকে বাধ্য হয়ে তারা ৫ হাজার টাকা দিলে রাতের মধ্যে হাফিজকে ছেড়ে দিবে বলে জানায়।

কিন্তু টাকা নেয়ার পর পুনরায় পরিদর্শক (অপারেশন্স) সোহরাব, এসআই বাবুল ও সুজন জানায় তাদের দাবিকৃত মোটা অংকের টাকা না দিলে হাফিজকে ডাকাতি মামলায় চালান দেওয়া হবে। পরবর্তীতে দাবিকৃত টাকা দেওয়ায় একমাস আগের এক মামলায় অজ্ঞাত আসামির স্থলে হাফিজকে আসামি করে আদালতে চালান দেওয়া হয়।

বাদী রেজিয়া বেগমের আইনজীবী নিজাম উদ্দিন খান সাংবাদিকদের জানান, এজহারটি গ্রহণ করে এ বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জেলা কারাগারের সুপার মো. ইকবাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, কারাগারে থাকা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রতিনিয়ত পুলিশ আসে। তবে কারাগারের সীমানা প্রচীরের ভেতর থেকে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করার নিয়ম নেই। এ ঘটনায় তাকে আসামি করায় বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিক্তি পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, আদালতে এজহার দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। হাফিজকে প্রথমে ডাকাতির প্রস্তুতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে এলাকায় চিহ্নিত ডাকাত। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও রয়েছে। পরবর্তীতে জামিন পাওয়ার পর তাকে অন্য জায়গা থেকে ছিনতাইয়ের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের