
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আমরা সত্যি সত্যি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি এবং এ নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা সাংবাদিকতা করার জন্য হয়নি। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে বলেছি, প্রাথমিক তদন্তে সত্য মনে হলে মামলা নিতে। কিন্তু অনেক সময় এটা করা হয়নি।
তিনি বলেন, মামলা যখন বাণিজ্যে পরিণত হয় তখন সেটা থামানো যায় না। পুলিশের উচিত প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে মামলা নেওয়া। কিন্তু সব সময় সেটা হয়ে ওঠে না।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির আইনি কাঠামো পর্যালোচনা’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের সমস্ত শ্রেণির মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, সেখানে সাংবাদিকরাও রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে সেগুলো সাংবাদিকতা করার জন্য হয়নি, হয়েছে অন্য মামলা এবং হত্যা মামলাও হয়েছে। সেই মামলাগুলো অস্বাভাবিক না হলেও অনাকাঙ্খিত। ২৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হলেও গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৫ জন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ না পেলে কাউকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয়। কিন্তু তারপরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের ব্যর্থতা নাই বলার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করছি।
তিনি জানান, ডিজিটাল যে প্রটেকশন অ্যাট করেছি সেটাতে আগের সব মামলা রোহিতকরণ ধারাতে বাতিল করেছি।
সাংবাদিকদের মধ্যে একাধিক সংগঠন বন্ধ করে এক সংগঠনে আসার আহবান জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে আগে নিজেরা সংস্কার করুন, নিজেদের মধ্যে দলাদলি গ্রুপিং বাদ দিন। তারপর গণমাধ্যম সংস্কার করলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অর্জন হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে কিছু অ্যানাবেলিং অ্যাক্ট আছে যেটাতে ফ্রিডম অব প্রেসের এফিশিয়েন্সি প্রয়োগ করার সুযোগ আছে। এর মধ্যে একটা ফ্রিডম অব ইনফরমেশন অ্যাক্ট, এর মধ্যে দুর্বলতা আছে। কিন্তু সাংবাদিকদের কাছে আমার বিনীত প্রশ্ন এই আইনের মধ্যে যতোটুকু তথ্য পাওয়া সুুযোগ ছিল সেটা বদিউল আলম মজুমদার চেষ্টা করলেও আপনারা কি করেছেন? না করলে কেন করেন নাই? আমাদের প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্টে যতোই সীমাবদ্ধতা থাক এটা কী সচল করার চেষ্টা করেছেন? এগুলো করলে সাংবাদিকতার শক্তিমত্তা ও স্বাধীনতা অনেক বাড়বে।
তিনি বলেন, আমার কাছে অনেক তদবির আসে যেসব তদবির আমি যখন মানি না। তখন দেখি আমাকে ভারতের দালাল বলা হয়। তার কিছু দিন পর থেকে আমাকে ছড়িয়ে নানা ধরনের কুৎসা, নোংরামি প্রচারণা চালানো হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের নিয়ে অসংখ্য গুজব ছড়ানো হলেও সে কারণে আমরা মামলা করি না। এমন কি আমরা প্রতিবাদও করি না; যোগ করেন আইন উপদেষ্টা।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম