
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকের মুখের চামড়ায় কুঁচকে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়, বিশেষ করে কপালের ত্বকে এটি বেশি দেখা যায়। এতে চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। চলুন জেনে নিই এর পেছনে কী কী কারণ রয়েছে এবং কিভাবে এর সমাধান করা যায়।
মুখের চামড়া কুঁচকে যাওয়ার কারণ
১. বয়সজনিত প্রভাব
বয়স বাড়লে ত্বকে থাকা কোলাজেন ও ইলাস্টিন নামক প্রোটিনের পরিমাণ কমে যায়। এই প্রোটিনগুলো ত্বককে টানটান ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক ঢিলে হয়ে যায় ও কুঁচকে যায়।
২. সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (UV Ray)
নিয়মিত রোদে কাজ করলে UV রশ্মি ত্বকের কোলাজেন নষ্ট করে দেয়, যার ফলে ত্বক দ্রুত শুষ্ক ও কুঁচকানো হয়ে পড়ে।
৩. পানিশূন্যতা
যথেষ্ট পানি না খেলে ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে রুক্ষ ও কুঁচকে যায়।
৪. ধূমপান ও অ্যালকোহল
এই অভ্যাসগুলো শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে, রক্তসঞ্চালন ব্যাহত করে এবং ত্বকের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৫. অতিরিক্ত চা ও কফি পান
চা-কফিতে থাকা ক্যাফেইন শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি করে এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা ত্বকের ক্ষতি করে।
৬. মানসিক চাপ ও ঘুমের অভাব
মানসিক চাপ ও ঘুমের ঘাটতি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়, যার ফলে ত্বক ক্লান্ত ও রুক্ষ দেখায়।
৭. পুষ্টির ঘাটতি
ভিটামিন সি, ই, ও জিংক–এর অভাব ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমিয়ে দেয়, ফলে ত্বক কুঁচকে যায়।
৮. মুখের অভ্যাসগত ভঙ্গি
বারবার কপাল কুঁচকানো, চোখ ছোট করা বা ভ্রু কুঁচকানোর মতো অভ্যাস ত্বকে স্থায়ী ভাঁজের সৃষ্টি করে।
প্রতিরোধ ও করণীয়
✅ ত্বকের যত্ন:
- প্রতিদিন মৃদু ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- সকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- রাতে শোবার আগে পরিষ্কার ত্বকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্রিম লাগান।
✅ সুষম খাদ্যগ্রহণ:
- প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
- খাদ্য তালিকায় রাখুন ফল, শাকসবজি, বাদাম, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ।
- ভিটামিন সি (কমলা, লেবু, পেয়ারা), ভিটামিন ই (বাদাম, সূর্যমুখী তেল), ও জিংক (ডাল, মাছ) সমৃদ্ধ খাবার খান।
- ভাজা ও প্রসেসড ফুড কম খান।
✅ সুস্থ জীবনধারা:
- প্রতিদিন অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমান।
- নিয়মিত ব্যায়াম বা মেডিটেশন করুন মানসিক চাপ কমাতে।
- ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
চিকিৎসা গ্রহণ
যদি মুখের ভাঁজ বা কুঁচকানো চামড়া খুব বেশি হয় বা দ্রুত বাড়তে থাকে, তাহলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। চিকিৎসা হিসেবে থাকতে পারে:
- মেডিকেল গ্রেড স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট
- লেজার থেরাপি
- মাইক্রোনিডলিং
- বোটক্স বা ফিলার
তবে এসব চিকিৎসা অবশ্যই দক্ষ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে করানো উচিত।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম