
এ সফরে চোটের শঙ্কা নিয়েই গিয়েছিলেন মুশফিক। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করলেও এরপর মাঠে ছিলেন না। তবে খেলার কথা ছিল ওয়ানডে সিরিজ, চোট থেকে সেরেও উঠেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে সে পরিকল্পনা। মা-বাবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে জরুরি ভিত্তিতে দেশে ফিরে আসছেন মুশফিক। জিম্বাবুয়ে সফরে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজের কোনোটিতেই খেলা হচ্ছে না তার।
আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় হারারেতে জিম্বাবুয়ের সাথে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। যে মুশফিকের অনুপস্থিতি নিশ্চয় বোধ করবেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কেননা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজেও সেরা খেলোয়াড় ছিলেন মুশফিক—একটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি খেলেছিলেন ৮৪ রানের আরেকটি ইনিংস। মে মাসে আইসিসির সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন।
মুশফিকের সাম্প্রতিক ফর্মটা তামিমের আফসোস বাড়িয়ে দিচ্ছে আরও, ‘মুশফিকের যে সামর্থ্য, অমন একজন খেলোয়াড়কে না পাওয়া গেলে সেটি বড় একটা ব্যাপার। দারুণ ফর্মেও ছিল সে। জিম্বাবুয়ের সাথে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগের দিন বৃষ্পতিবার গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে
তাঁর জায়গায় সুযোগ পাওয়ার মতো যাঁরা আছেন, তাঁদের জন্য ব্যাপারটাকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন তামিম। জিম্বাবুয়েতে সিরিজ কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘যারা ওর (মুশফিক) জায়গায় খেলবেন, এমন না যে তারা নতুন। সবাই কমবেশি ম্যাচ খেলেছে। আশা করি, তারা সুযোগটা নেবে, যাতে মুশফিকের অভাবটা বুঝতে না পারি। আমি নিশ্চিত, যারা খেলবে, তারা ভালো করবে। তবে মুশফিককে তো আপনি মিস করবেনই।’
মুশফিকের পাশাপাশি প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ পাচ্ছে না মোস্তাফিজুর রহমানকেও। তামিম অবশ্য আগামীকালের ম্যাচে মোস্তাফিজের খেলার সুযোগকে বলেছেন ‘ফিফটি ফিফটি’। ম্যাচের দিন ফিজিও পর্যবেক্ষণ করেই মোস্তাফিজের খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক। তবে দলীয় সূত্রের খবর, মোস্তাফিজের চোটের ধরন অনুযায়ী সেরে উঠতে সময় লাগবে কয়েক দিন।
চোটের সমস্যা আছে তামিমের নিজেরও। একমাত্র টেস্টে খেলেননি, ওয়ানডেতেও তাঁকে ‘ম্যানেজ’ করে খেলতে হবে বলেই জানিয়েছেন। অবশ্য প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন ভালোই, ৬২ বলে করেছেন ৬৬ রান।
আপাতত চোট ভুলে সিরিজের দিকেই নজর তামিমের, ‘৫-৬ দিন বিশ্রাম নিলেই আমার চোট ঠিক হয়ে যাবে, এমন নয়। ফিজিও একটা পরিকল্পনা দিয়েছে। (বিশেষজ্ঞদের কাছে) সেটা ই-মেইলে পাঠানোও হয়েছে। তারাও বলেছে সেরে উঠতে একটু সময় লাগবে। এখন “ম্যানেজ” করার চেষ্টা করছি, ঝুঁকিমুক্ত থেকে যতটুকু সম্ভব। গতকাল টেপ পেঁচিয়ে যতটুকু পারি ব্যাটিং করেছি। ফিল্ডিং খুব বেশি করিনি অবশ্য। একটু এদিক-সেদিক করে আশা করি এই সিরিজটা পার করতে পারব। এরপর আপনারা জানতে পারবেন।’
মুশফিকের না থাকা, মোস্তাফিজকে শুরুতে না পাওয়া, নিজের চোট...তামিমের সামনে বড় একটা চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে। তবে এসব মেনে নিচ্ছেন তামিম।
সমস্যাটাকে বরং সুযোগ হিসেবে দেখতে চান তিনি, ‘পুরো স্কোয়াড যদি ফিট থাকে, এর চেয়ে ভালো কিছু হয় না। তবে চোট বা অন্য ব্যাপার থাকবেই। এগুলো মেনে নিতে হবে। মুশফিকের পরিস্থিতি দেখুন, বা মোস্তাফিজের চোট—এগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এ জন্যই ১৬-১৭ জন রাখা হয় স্কোয়াডে। যারা স্কোয়াডে আছে সবাই যোগ্য। এটা নিয়ে আপনি রাগারাগি বা চিৎকার করলে তো হবে না। পৃথিবী এভাবেই চলে, এসব মেনে নিতে হবে। এটাকে আরেকজনের সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত।’
রেডিওটুডে নিউজ/এমএম/ইকে