
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি স্থলভাগে উঠে এসে পরিণত হয়েছে স্থল গভীর নিম্নচাপে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে দেশের সাতক্ষীরা অঞ্চলে প্রবেশ করে। এরপর ধীরে ধীরে এটি দুর্বল হতে থাকে। তবে এর প্রভাব আজ শুক্রবার সারা দিনব্যাপী থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, স্থলভাগে উঠে আসা গভীর নিম্নচাপটি এখন সাতক্ষীরা ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে এবং এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় আজ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
‘ভারী বৃষ্টি’ বলতে ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার এবং ‘অতি ভারী বৃষ্টি’ বলতে ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাতকে বোঝায়।
আজ শুক্রবার সকালে আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, গভীর নিম্নচাপটি এখনো স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসেবে সক্রিয় রয়েছে। এটি ধীরে ধীরে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগোচ্ছে। এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আজ বৃষ্টি হবে।
রাজধানী ঢাকায় সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ এবং গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির দেখা মিলেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ সারা দিন রাজধানীতে এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
নাজমুল হক আরও জানান, আগামীকাল শনিবার রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকার বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের পরবর্তী ধাপে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে এসব অঞ্চলে বৃষ্টির মাত্রা আরও বাড়তে পারে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। পরদিন বুধবার সেটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপ নেয়। বৃহস্পতিবার ভোরে এটি নিম্নচাপে এবং পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাব পড়তে শুরু করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
গতকাল সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে—১৬৮ মিলিমিটার। রাজধানী ঢাকায় রেকর্ড করা হয়েছে ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি।
নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের বহু জেলায় ভারী বৃষ্টি ও উঁচু জোয়ারের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভোলা-পটুয়াখালীসহ কয়েকটি অঞ্চলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পড়ে। ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। এতে করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম