মঙ্গলবার,

৩০ এপ্রিল ২০২৪,

১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মঙ্গলবার,

৩০ এপ্রিল ২০২৪,

১৭ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

খুলনার সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল নিজেই ‘সংক্রমিত’

শুভ্র শচীন, খুলনা

প্রকাশিত: ০০:২৫, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

আপডেট: ০০:২৮, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

Google News
খুলনার সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল নিজেই ‘সংক্রমিত’

ছবি: সংগৃহীত

নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক-জনবল। ৫৩ বছরেরও পুরোনো ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ছে। যেকোনো মুহূর্তে ছাদ ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এরমধ্য দিয়েই চলছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র সংক্রামকব্যাধি হাসপাতালের কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরীর মীরেরডাঙ্গায় ভৈরব নদের পাশে ১৯৬৭ সালে মাত্র ২০টি বেড নিয়ে যাত্রা শুরু হয় হাসপাতালটির। ৫৩ বছর পরেও বাড়েনি বেডের সংখ্যা। অবকাঠামোগত কোনো পরিবর্তন হয়নি। হাসপাতালের মূল ভবনে কোনো রকমে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম।

সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি এই হাসপাতাল ডায়রিয়া, টিটেনাস, হাম, জলাতঙ্ক রোগসহ যেকোনো ধরনের সংক্রামকব্যাধির রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। হাসপাতালের পুরোনো অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী মোট ২৪টি পদ রয়েছে।

এরমধ্যে মেডিকেল অফিসারের তিনটি পদ থাকলেও, কাজ করছেন দুজন। সিনিয়র স্টাফ নার্সের ছয়টি পদের মধ্যে একটি ও সহকারী নার্সের চারটি পদই শূন্য। দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে অফিস সহায়কের পদ। এইপদে কাজ করানো হচ্ছে ফার্মাসিস্টকে দিয়ে। বাবুর্চির দুটি পদই শূন্য, পরিচ্ছন্নতাকর্মীর তিনটি পদ শূন্য রয়েছে ২০১৭ সালের আগে থেকে।

ওয়ার্ড বয়ের দুটি পদের মধ্যে কাজ করছেন একজন। অপরজন কর্মস্থলে দীর্ঘদিন আসছেন না। আয়ার দুটি পদই শূন্য রয়েছে। তবে আউটসোর্সিংয়ের দুজনকে দিয়ে এ কাজ চালানো হচ্ছে। হাসপাতালের শুরু থেকে নেই কোনো নিরাপত্তা প্রহরী। প্রহরীর কাজ করছেন আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া একজন।

চার একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালটির নতুন কোনো অবকাঠামো নির্মাণ না হওয়ায় ৫০ বছর আগের পুরোনো অবকাঠামোর অবস্থা খুবই নাজুক। একতলাবিশিষ্ট ভবনটি কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চললেও, বর্তমানে সে ভবনের ওয়াল ও সিলিং দিয়ে প্রতিনিয়ত পলেস্তারা এবং ঢালাই খসে পড়ছে। পুরোনো এই ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ছাদের পলেস্তারা না থাকায় যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসা কর্মকর্তার আবাসিক ভবন, নার্সদের আবাসিক ভবন, কর্মচারীদের দুটি ডরমেটরি ভবনসহ আবাসিক সব স্থাপনা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ডরমেটরি ভবনে কোনো রকম কয়েকজন কর্মচারী তাদের পরিবার নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে বাস করছেন। আবাসিক ভবনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ঝোপ-জঙ্গল হচ্ছে।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালেটিতে চিকিৎসকসহ জনবলের সংকট রয়েছে। একটি কক্ষের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু সবাইকেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড প্রয়োজন। হাসপাতালের অবকাঠামোগত অবস্থা নাজুক। এরমূল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং আবাসিকের প্রতিটি ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ৫০ বছর আগের অর্গানোগ্রাম পরিবর্তন এবং বিশেষায়িত চিকিৎসক নিয়োগ।

রেডিওটুডে নিউজ/জেএফ

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের