ছবি: রেডিও টুডে
পরিত্যক্ত ঘোষণার প্রায় পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও খুলনার খালিশপুরের গোয়ালখালীতে অবস্থিত সরকারি পিএইচটি সেন্টারের দৃষ্টি ও বাকশ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণ হয়নি। নতুন করে স্কুলভবন নির্মাণ কবে হবে তা বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কেউ। যে কারণে অধ্যয়নরত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা পরিত্যক্ত ঘোষিত ওই স্কুলেই পাঠদান করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১০৫ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী রয়েছে। যার মধ্যে ৪২ জন বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বালিকা এবং ২০ জন বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বালক। রয়েছে ২০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বালিকা ও আটজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বালক। এখানে ৭৩ শিক্ষার্থীর আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিন তলা বিশিষ্ট জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত ভবনেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। অর্ধশত বছরের আগে পাকিস্তান সরকারের সময়ে নির্মিত বিদ্যালয়টিতে পাশে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রতীকী ভাষা শিক্ষাসহ সাধারণ শিক্ষা দেওয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের আবাসিক থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আরও রয়েছে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণসহ চিকিৎসাসেবা, খেলাধুলা, চিত্ত-বিনোদনের ব্যবস্থা।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শেণির বাকপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রাকিব হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি তার ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা করেছে, বিদ্যালয় ভবনটি খুবই জরাজীর্ণ। কবে বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মিত হবে।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের দ্বায়িত্বরত এক কর্মচারীর দাবি, বিদ্যালয়ের ভবনটির কাঠামো এখনও ভালো রয়েছে।
তিনি জানান, বিদ্যালয়ের আগের তত্ত্বাবাধায়ক কাজী মুহাম্মাদ ইব্রাহীম গণপূর্ত অধিদফতরের মাধ্যমে বিনা কারণে বিদ্যালয়টি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। সেইসঙ্গে বিদ্যালয়ের পাশের আরও দুটি আবাসিক ভবন ভেঙে ফেলেন।
তিনি আরও জানান, বিদ্যালয়ের আশেপাশের বাউন্ডারি ওয়ালগুলো অরক্ষিত রয়েছে। বহিরাগতদের আনাগোনাসহ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয় চত্বর। দ্রুত নতুন করে ভবণ নির্মাণসহ অরক্ষিত বাউন্ডারি ওয়াল তৈরি করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির পিএইচটি সেন্টারের এডি আবিদ হাসান বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এখনও বিদ্যালয় সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তবে যতটুকু শুনেছি পরিত্যক্ত ভবন নতুনভাবে নির্মাণের জন্য চট্রগ্রাম ও খুলনা একনেকে যৌথভাবে ১০০ কোটি টাকার অনুমোদন করা হবে। যে কারণে নতুন বিদ্যালয় নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে। অনুমোদন হলে নতুন ভবণ নির্মাণ করা হবে। তারপরও আমি বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
খুলনা বিভাগীয় সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মোতাহের হোসেন বলেন, নতুন করে বিদ্যালয় তৈরির জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা। তারপরও বিষয়টি দেখছি এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেব।
রেডিওটুডে নিউজ/জেএফ