শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-হাসপাতালের ছাদে হবে দেড় হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যু

বুধবার,

২২ অক্টোবর ২০২৫,

৭ কার্তিক ১৪৩২

বুধবার,

২২ অক্টোবর ২০২৫,

৭ কার্তিক ১৪৩২

Radio Today News

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-হাসপাতালের ছাদে হবে দেড় হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যু

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৪৯, ২২ অক্টোবর ২০২৫

Google News
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-হাসপাতালের ছাদে হবে দেড় হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যু

দেশে সরকারি সব স্থাপনার ছাদ ব‍্যবহার করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট। প্রথম ধাপে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের ছাদ ব্যবহার করা হবে।

এ ব্যাপারে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে তিনটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাদা করে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ। তিনটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিবরা এতে স্বাক্ষর করেন।

সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে বলা হয়, ছাদ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা। ৪৬ হাজার ৮৫৪টি প্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৪৫৪ দশমিক ৬১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্রে অংশ নিয়ে যে কম দামে বিদ্যুৎ দেবে, তার সঙ্গে চুক্তি হবে। ঠিকাদার নিজেই বিনিয়োগ নিয়ে আসবেন। বাংলাদেশ ব‍্যাংক থেকেও বিনিয়োগ নিতে পারবেন তারা। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানও এই কর্মসূচিতে বিনিয়োগ করবে।

দরপত্র প্রক্রিয়ার সময় কমিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে দরপত্র জমার কাজ শেষ করতে হবে। ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দরপত্র মূল‍্যায়ন করে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি সই করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে বিতরণ সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কম সময়ে বাস্তবায়ন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, আগের মতো জটিল প্রক্রিয়া নেই। সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্য বেশি সময় লাগে না। বেঁধে দেওয়া সময়ে করা সম্ভব। এটা সবার অস্তিত্বের বিষয়, বাস্তবায়ন করতেই হবে। শ্রীলঙ্কায় ৭৫ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। ভারতে ৪০ শতাংশ। তাহলে এদেশে হবে না কেন?

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমছে। দৈনিক উৎপাদন বছরে কমে ২০ কোটি ঘনফুট। গত ৬ মাসের চেষ্টায় নতুন যুক্ত হয়েছে মাত্র ৫ কোটি ঘনফুট। অবৈধ সংযোগ একদিকে কাটা হয়, আরেক দিকে সংযোগ হয়। চড়া দামে এলএনজি আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে প্রতি ইউনিটে ২০ টাকা খরচ হবে। শিল্পে দিতে হবে ৪০ টাকায় গ্যাস। এটা সম্ভব নয়। তাই মুক্তির উপায় হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি। এ জন‍্যই সরকারি ভবনে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এগুলো গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, ব‍্যাটারি লাগবে না। তিন হাজার মেগাওয়াট যদি পাওয়া যায়, বাড়তি খরচের বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে সাশ্রয় করা যাবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ। তিনি বলেন, সরকারি সব স্থাপনার ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এ লক্ষ্যে এখন সমঝোতা স্মারক করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে সবুজ বিপ্লবের পথে চলমান যাত্রা বেগবান হবে।
২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নেই জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি গত ২৯ জুনে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদন হয়েছে। বাস্তবায়নে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি ও সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী পরিহার করতে ইতোমধ্যে কারিগরি স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ খাতের ছয়টি বিতরণ সংস্থা হচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো), নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের