
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মাহির নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোরে বংশাল থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে পুরান ঢাকায় টিউশনিতে যাওয়ার পথে খুন হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ বলছে, ওই ছাত্রীর প্রেমঘটিত কারণেই খুন হয়েছেন জোবায়েদ।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা জানিয়েছেন, বর্ষা ও তার বন্ধু মাহির রহমানের প্রেমের জেরে খুন হয়েছেন জবি শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন। সোমবার সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বর্ষাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব তথ্য জানান।
রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষার সঙ্গে মাহির রহমানের ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাহির রহমান বোরহানুদ্দীন কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়েন।
আর বর্ষা পড়ত ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে। পাশাপাশি বাড়িতে তাদের বেড়ে ওঠা ছোট থেকে। তাদের মধ্যে ছিল দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্ক। চতুর্থ শ্রেণি থেকে একে অপরকে পছন্দ করত।
কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে টানাপড়েন ঘটে। কিছুদিন আগে তাদের সম্পর্কের ভাঙন হয় এবং বর্ষা তার বন্ধু মাহির রহমানকে জানায়, সে জোবায়েদকে পছন্দ করে। এটা জানার পর রাগে ক্ষোভে মাহির রহমান তার বন্ধুকে নিয়ে জোবায়েদকে হত্যা করেছেন।
ওসি বলেন, সম্প্রতি বর্ষা মাহিরকে জানায়; সে জোবায়েদকে পছন্দ করে। কিন্তু জোবায়েদকে সে তার পছন্দের কথা এখনো জানায়নি।
জোবায়েদের সঙ্গে বর্ষার কোনো প্রেমের সম্পর্ক নেই। তাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো মেসেজও পাওয়া যায়নি। কিন্তু বর্ষার কথার ওপর ভিত্তি করে রাগে-ক্ষোভে বর্ষার বন্ধু তার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জোবায়েদকে খুন করেন।
ওসি আরো বলেন, বর্ষার মধ্যে কোনো হতাশা বা কান্নার কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি। তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো নার্ভাসনেসও পাওয়া যায়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বর্ষাকে চিন্তামুক্ত দেখা গেছে। আমরা আরো বিস্তর তদন্ত করব।
এর আগে, গতকাল রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। বাসার নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্তের দাগ ছিল এবং তৃতীয় তলার সিঁড়িতে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার মরদেহ। এরপর রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্রীকে নিজ বাসা থেকে পুলিশ প্রটোকলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চলে জিজ্ঞাসাবাদ।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম