শুক্রবার,

২৯ মার্চ ২০২৪,

১৫ চৈত্র ১৪৩০

শুক্রবার,

২৯ মার্চ ২০২৪,

১৫ চৈত্র ১৪৩০

Radio Today News

১৬ টি ঝুঁকিপূর্ণ ক্লাসে পাঠদান: আতংকিত শিক্ষক শিক্ষার্থী

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

আপডেট: ০৩:৫০, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

Google News
১৬ টি ঝুঁকিপূর্ণ ক্লাসে পাঠদান: আতংকিত শিক্ষক শিক্ষার্থী

উপরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট এই নিয়েই -আসাদুজ্জামান গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলছে। স্কুলের ১৬টি ক্লাস ঝুকিপুর্ণ ঘোষনা করা হয়েছে। ঝুকি নিয়ে তারপরও ক্লাস চলছে। যারা পাঠদান করেন ও ক্লাসে থাকেন তারা আতংকে থাকেন। 

গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে ১৯৬৬ সালে এক একর জমির ওপর আসাদুজ্জামান গার্লস হাইস্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৬৮ সালে ২২ কক্ষের দ্বিতল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। তারপর থেকে এখানেই স্কুলের কার্যক্রম চলে  আসছে। ২০০৩ সালে স্কুলটিতে কলেজ শাখা চালু করা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্ট তিন কক্ষের একটি একতলা ভবন নির্মাণ করে দেয়। পরে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব অর্থায়নে দোতলার কাজ সম্পন্ন করা হয়।  আসাদুজ্জামান স্কুল শাখায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৫০ জন আর কলেজ শাখায় রয়েছে ৩শ’ ৫০ শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহন করছে। স্কুল শাখায় শিক্ষক রয়েছেন ২০ জন এবং কলেজ শাখায় শিক্ষক আছেন ১১ জন।

১৯৬৬ সালে নির্মিত স্কুল ভবনে ২০০৮ সালে প্রথম ত্রুটি দেখা দেয়।পরে পর বছর বছর শ্রেণি কক্ষগুলো জরাজীর্ণ হতে থাকে । দিন যতোই যাচ্ছে -ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ছে। সামান্ন বৃষ্টি হলেই ছাদ চুয়ে পানি পড়ে । এতে সব সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

স্কুল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৯৬৮ সালে স্কুলের উত্তর ও পশ্চিম অংশজুড়ে বাইশ কক্ষের দুইতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে সাতটি শ্রেণিকক্ষের দুইটি ২০১৬ সালে পরিত্যাক্ত ঘোষনা এবং অবশিষ্ট পাঁচটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অন্যদিকের নয়টি কক্ষের তিনটিকে ২০০৮ সালে পরিত্যাক্ত এবং ছয়টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তাতে কি ঝুকি নিয়েই পাঠদান ও ক্লাস চলেই আসছে। 

দশম শ্রেণির ছাত্রী আশফিয়া জানায় ,আরসিসি পিলার ও গ্রেট বিমগুলোতে  ফাটল দেখা দেওয়ায় ভবনটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তারপরও শিক্ষার্থীরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করে থাকে।

মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা রনি মিয়া জানায়, তার মেয়ে ওই স্কুলের ৭ শ শ্রেনীতে পড়ে । মেয়েকে নিয়ে তার অনেক দু:শ্চিন্তা । কখন কি হয় এই ভরে থাকেন সব সময়। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাঁদের ছেলেমেয়েকে বিদ্যালয়ে আসতে দিতে চান না।

ওই স্কুলের শিক্ষক মৃনাল কান্তি সরকার জানান, কি করবো আমরাতো কিছু করতে পারিনা । অনেক দিন যাবৎ পাঠদান করি জীবনটা হাতে নিয়ে। এতো গুলো মানুষের জীবনের কথা ভেবে সরকারী ভাবে উদ্যোগ নেয়া দরকার । 

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইদ্রিস আলী সরকার জানান, বর্তমানে বিদ্যালয়ের মূলভবন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কারণে ভয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে শিক্ষার মৌলিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা না গেলে শিক্ষার্থীরা আরও স্কুল বিমুখ হবে ।  দ্রুত এ ব্যাপারে একটা পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। 

ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বিকল্প পাঠদানের পদক্ষেপ নিতে গত বছরের অক্টোবরে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক, পৌরসভার মেয়র, গণপূর্ত বিভাগ ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে। পত্র পেয়ে স্থানীয় সাংসদ, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি পরিদর্শন করেছেন।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহ্ মাঈনুল ইসলাম শিল্পু জানান, ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে আবেদন করা হয়েছে। জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।


 

রেডিওটুডে নিউজ/ইকে

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের