
দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে আলোচনা হলেই ঘুরেফিরে সামনে আসে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঋণ খেলাপির চিত্র। এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক অর্থনীতিতে, আর ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এক বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই খাতটির সংস্কারে নেমে পড়েন। তার উদ্যোগে খোলাসা হতে থাকে ব্যাংক ব্যবস্থার দীর্ঘদিনের জমে থাকা ভয়ংকর বাস্তবতা।
এই সময়ে চিহ্নিত হওয়া এক ডজন দুর্বল ব্যাংকের মধ্যে কয়েকটির সম্পদ মূল্যায়ন ইতিমধ্যে পর্যালোচনা করে শেষ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল, ইউনিয়ন, সোশ্যাল ইসলামী ও এক্সিম ব্যাংক।
মূল্যায়নের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৪৮ শতাংশ থেকে শুরু করে ৯৬ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, এই দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং এ জন্য সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখিত পাঁচটি দুর্বল ব্যাংকের বাইরে আরও অন্তত ২০টি ব্যাংকের ক্ষেত্রেও একই ধরনের একীভূতকরণ ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এই তালিকায় সরকারি ব্যাংকও রয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের ব্যাপারেও নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান তিনি।
গভর্নরের ভাষ্য অনুযায়ী, এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এই ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির চেষ্টা চলছে। বিক্রির এ প্রক্রিয়া সফল হলে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ব্যাংকটির বিদ্যমান আর্থিক ঘাটতি পূরণ করা হবে।
এ মুহূর্তে দুর্বল কোনো ব্যাংক বন্ধ করার পরিকল্পনা নেই সরকারের। বরং টিকিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন আহসান এইচ মনসুর।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম