
বিশ্ব অর্থনীতির পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে চীন এবং ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই প্রধান নীতিনির্ধারকের মধ্যে সম্প্রতি এক যুগান্তকারী বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো বেইজিংয়ে।
পিপলস ব্যাংক অব চায়নার গভর্নর প্যান কংশেং এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর সভাপতি ক্রিস্টিন লাগার্ড এই প্রথমবারের মতো বার্ষিক গভর্নর বৈঠকে মিলিত হয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থায় পারস্পরিক সহযোগিতার পথরেখা তৈরি করলেন।
সমঝোতার এক নতুন অধ্যায়। বৈঠকে উভয় পক্ষ একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং নীতিতে যৌথ উদ্যোগের ভিত্তি স্থাপন করে। চুক্তির আওতায় রয়েছে—
গভর্নর বা প্রেসিডেন্ট-স্তরের নিয়মিত বৈঠকের ব্যবস্থা, তথ্য ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের বিনিময়, এবং নীতিনির্ধারণে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সংলাপের কাঠামো গড়ে তোলা।
এটি শুধুই একটি চুক্তি নয়, বরং একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন—যেখানে দুই অর্থনৈতিক জায়ান্ট বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছে।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর প্যান কংশেং বৈঠকে বলেন, “চীন উচ্চমানের ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা আরও গভীর করার প্রস্তুতি রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এই বৈঠক কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং ইসিবি ও পিবিওসির মধ্যে নীতিগত সহযোগিতার নতুন একটি স্তরের ভিত্তি গড়ে তুলবে।
ইসিবি প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডও এই সহযোগিতাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “এমওইউ স্বাক্ষরের মাধ্যমে পিবিওসির সঙ্গে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই সম্পর্কের যে ধারা রয়েছে, তা আরও দৃঢ় হলো। বৈশ্বিক মুদ্রানীতি এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে এ ধরনের পারস্পরিক বোঝাপড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
বিশ্বব্যাপী যখন মুদ্রাস্ফীতি, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রযুক্তিগত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অর্থনীতিগুলো চলেছে, ঠিক সেই সময়ে চীন ও ইউরো অঞ্চলের এই সংলাপ আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় একটি স্থিতিশীল বার্তা পাঠাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চুক্তি আন্তর্জাতিক মুদ্রানীতিতে এক নতুন ভারসাম্যের সূচনা করবে এবং ভবিষ্যতে বৈশ্বিক বাজারে আস্থা ও স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম