
কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলা ও ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে দুই দিনের বিশেষ আলোচনা সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, ‘যদি প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো হস্তক্ষেপ না মেনে থাকেন, তবে লোকসভায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট বলুন- ট্রাম্প মিথ্যাবাদী।’
রাহুল অভিযোগ করেন, অপারেশন শেষে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, হামলার লক্ষ্য তাদের সেনাঘাঁটি নয়। এতে সেনাবাহিনীর ‘ফ্রিহ্যান্ড’ না থাকায় ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রাহুল বলেন, “ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বের না ছিল স্পষ্টতা, না ছিল সাহস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাই দাবি করছেন, তার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়েছে।”
লোকসভায় রাহুলের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী অভিযোগ করেন, ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতার প্রমাণ হলো, অপারেশন সিঁদুরের পরপরই পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, সাফল্য নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু পেহেলগাম হামলার ব্যর্থতা ও দায় কার- তা নিয়ে কেউ কথা বলছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেন, “এত বড় ব্যর্থতার পরও তিনি পদত্যাগ করেননি।
রাজ্যসভাতেও একই ধরনের বক্তব্য রাখেন বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি বলেন, মোদিকে এসব বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিতে হবে।
এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় দুই দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন না। রাজ্যসভায় ডিএমকে নেতা থিরুচি শিবা বলেন, “১১ বছরে প্রধানমন্ত্রী কখনোই সংসদে বিতর্কে অংশ নেননি। গণতন্ত্রকে সম্মান দেখিয়ে অন্তত তিনি যেন উপস্থিত থাকেন।”
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের জনগণের পানি বন্ধ করা সন্ত্রাসবাদ দমন নয়, বরং উল্টো ফল দিতে পারে। এই সিদ্ধান্তে জঙ্গিবাদ আরও বাড়বে। তিনি সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মোদি সন্ধ্যা ছয়টার পর সংসদে এসে বিতর্কে অংশ নেন, কিন্তু রাহুল গান্ধীর ভাষণের সময় তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম