
মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার রহস্য কেবলই জটিল হচ্ছে ভারতে। ১৯ জনের মৃত্যুর পর উচ্চ সতর্ক কেরালা রাজ্য। চলতি বছর রাজ্যটিতে সংক্রমণ হয়েছে ৬৯ জনের দেহে। গেলবছর গুচ্ছ সংক্রমণের ঘটনায় একটি পানির প্রবাহকে দায়ী করা হলেও এবছর রোগের উৎস শনাক্ত করতে গিয়ে দিশেহারা প্রশাসন।
বৈজ্ঞানিক নাম 'প্রাইমারি অ্যামোবিক মেনিঞ্জোএন্সিফ্যালাইটিস' বা পিএএম; পরিচিত 'মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা' নামে। বিরল এ রোগের কারণ 'নাইগ্লেরিয়া ফাউলেরি' নামের এক ধরনের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে সক্ষম এককোষী অ্যামিবা। উষ্ণ ও স্বাদু পানিতে ভেসে বেড়ানো এই অণুজীব নাকের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশের পর একবার মস্তিষ্কে পৌঁছে গেলেই হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী।
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যে এক মাসে মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার সংক্রমণে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যুর পর, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জারি করা হয় উচ্চ স্বাস্থ্য সতর্কতা। চলতি বছর সংক্রমণ ধরা পড়েছে অর্ধশতাধিক।
তিন মাসের শিশু থেকে শুরু করে ৯১ বছর বয়সী মানুষ, রেহাই নেই কারো। ঝুঁকি এড়াতে পুকুর বা হ্রদের মতো বদ্ধ পানির উৎসগুলোতে সাঁতার ও গোসল করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ প্রশাসনের।
রোগের কারণ শনাক্তে একযোগে কাজ করছে ভারতের জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং কেরালার স্বাস্থ্য বিভাগ। পরিবেশ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে নমুনা, পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বিভিন্ন উৎসের পানি।
গেলবছর গুচ্ছ সংক্রমণের পর একটি পানির প্রবাহকে দায়ী করা হয়- তবে এবছর রোগের উৎস শনাক্ত করতে গিয়ে প্রশাসন বলছে, চলতি বছর রোগটি সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি বেশ বিক্ষিপ্ত।
ভারতের কেরালা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বলেন, ‘অ্যামিবার উপস্থিতি সর্বত্র। এখন তো এমনকি অন্যান্য রাজ্যেও সংক্রমণের খবর পাচ্ছি আমরা। ওসব জায়গা থেকেই এ রোগ কেরালায় পৌঁছেছে। এখানে সঠিকভাবে রোগটি শনাক্ত করা হচ্ছে এবং চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
হঠাৎ তীব্র জ্বর ও মাথাব্যথা, বমি বা বমিভাব, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বিভ্রম, খিঁচুনি ও জ্ঞান হারানো এ প্রদাহের উপসর্গ। রোগের বিস্তার রোধে উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্র স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং কুয়াসহ পানির বিভিন্ন উৎসে ক্লোরিন দেয়ার আহ্বান জনস্বাস্থ্যবিদদের। কিন্তু এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও চিকিৎসার উপায় সীমিত বলে আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার কম, স্বীকারোক্তি চিকিৎসকদের।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম