বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুর রায় শুনলেন শেখ হাসিনা

সোমবার,

১৭ নভেম্বর ২০২৫,

৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

সোমবার,

১৭ নভেম্বর ২০২৫,

৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

Radio Today News

বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুর রায় শুনলেন শেখ হাসিনা

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

Google News
বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুর রায় শুনলেন শেখ হাসিনা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করা হয়। অন্য দুই বিচারক হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

তবে এমন দিনেই মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন হাসিনা, যেদিন আবার তার বিবাহবার্ষিকী। আজ ক্ষমতাচ্যুত এই স্বৈরশাসকের ৫৮তম বিবাহবার্ষিকী।

১৯৬৭ সালে শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে থাকাবস্থায় মা ফজিলাতুন নেছার তত্ত্বাবধানে বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় শেখ হাসিনার। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, এ দম্পতির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা কিছুটা তড়িঘড়ি করেই করেছিলেন ফজিলাতুন নেছা।

শেখ হাসিনা ও এম এ ওয়াজেদ মিয়া দম্পতির সংসারে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নামে দুই সন্তান রয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জন্ম ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর।

১৯৬৭ সালে শেখ মুজিবুর রহমান কারাবন্দী থাকা অবস্থায় মা ফজিলাতুন নেছার তত্ত্বাবধানে পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় শেখ হাসিনার।

শেখ হাসিনা পাঁচ দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন—১৯৯৬-২০০১, ২০০৯-২০১৪, ২০১৪-২০১৯, ২০১৯-২০২৪ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। 

২০২৪ সালের ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। আন্দোলন দমনে পুলিশের গুলি ও হামলার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলে জনসাধারণের ওপর হামলে পড়ে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতেই সরকার পতন হয়য়।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাতেই শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে বলা হয়—তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত। দুই অভিযোগে শেখ হাসিনা, এক অভিযোগে আসাদুজ্জামান খান মৃত্যুদণ্ড পান।

দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ছয় অধ্যায়ে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে রায় ঘোষণা করা হয়।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরই ২০২৪ সালের আগস্টে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠনের পর প্রথম মামলাই ছিল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ। গত বছরের ১৭ অক্টোবর প্রথম বিচারকাজ হয় এবং সেদিনই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

শুরুতে শেখ হাসিনাই ছিলেন একমাত্র আসামি। পরবর্তীতে ১৬ মার্চ প্রসিকিউশনের আবেদনে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে আসামি হিসেবে যুক্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ে ১২ মে এবং ১ জুন শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচ দফা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হয়।

১০ জুলাই অভিযোগ গঠন হয়। সেদিনই সাবেক আইজিপি মামুন নিজের দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন। ১২ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শুরু হয়ে ২৩ অক্টোবর শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড দাবি করে। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন অবশ্য আসামিদের খালাস চান।

সবশেষে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় এটি প্রথম রায়—যেখানে দেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মামলাটির নিষ্পত্তি হলো।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের