বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পদ্মা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়া বাংলাদেশের অধিকার, ভারতের কোনো দয়া নয়। ভারত শুধু উজানের নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত নয়, বরং বাণিজ্য ও সীমান্ত হত্যার মতো ঘটনার মাধ্যমেও সংকট সৃষ্টি করছে। আমরা এসব আর দেখতে চাই না।’
শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে ‘পদ্মা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দাবিতে সমন্বয় কমিটি’ আয়োজিত গণসমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭৬ সালে মাওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক লং মার্চের পর ১৯৭৭ সালে শহীদ জিয়া পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে কাজ শুরু করেন। এরপর বেগম খালেদা জিয়াও এটি নিয়ে কাজ করেন। পরে আওয়ামী সরকার ১৯৯৬ সালে একটি পানিবণ্টন চুক্তি করে গ্যারান্টি ক্লজ ছাড়াই। আগামী বছর ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে।
এরপর কী হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আসন্ন ২০২৬ সালের নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওই নির্বাচনে শক্তিশালী সরকার গঠন হতে হবে। যারা ভারতের সঙ্গে শক্ত অবস্থান নিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করতে পারবে।
পদ্মার পনির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলমান পদ্মা বাঁচাও আন্দোলন যত দিন দাবি আদায় না হয়, তত দিন চলবে। তারেক জিয়া এ আন্দোলনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভারতের এই আগ্রাসন মোকাবেলায় গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ করতে হবে। গঙ্গা ব্যারাজে বর্ষা মৌসুমে পানি ধরে রাখা হবে।
ওই পানি শুষ্ক মৌসুমে কৃষিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যাবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই ব্যারেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। ধর্মকে ভালোবাসে কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। দেশের বাণিজ্য সংকটে রয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচিত সরকার ছাড়া এ সংকট কাটবে না। সঠিক সময় দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ তৈরিতে নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে। স্বৈরাচার যেন আর ফিরে না আসে, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কর্মসংস্থান, কৃষকদের সার, বীজ সরবরাহ, বিচার বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নিয়ে কাজ করবে।’
জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাজনীতিতে তারা সংকট সৃষ্টি করছে। পিআর পদ্ধতি দাবি করছে। অথচ পিআর পদ্ধতি কী, সাধারণ জনগণের ধারণা নেই। তারা সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছে। সরকার গঠন অত সহজ নয়। ৫১ শতাংশ ভোট পেতে হবে। অথচ শেষ নির্বাচনে তারা পেয়েছিল ৫ শতাংশ ভোট। জামায়াত মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহত্যা করেছে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর-৩ আসনের সাবেক এমপি হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে সমাবেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী শাহজাহান মিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম, রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহীর প্রার্থী আবু সাঈদ চাঁদসহ দলের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

