শনিবার,

১৮ মে ২০২৪,

৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শনিবার,

১৮ মে ২০২৪,

৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Radio Today News

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২২ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন 

প্রকাশিত: ০৩:৩১, ১৭ জুন ২০২২

আপডেট: ০৩:৩৫, ১৭ জুন ২০২২

Google News
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২২ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়ে ঘোষণা করা বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকেল ৩টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়।এতে ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।সিনেটের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য সিন্ডিকেট ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার প্রস্তাবিত অনুন্নয়ন ব্যয় অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ ৬৭১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ৭২.৮৫ শতাংশ; গবেষণা মঞ্জুরি বাবদ ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ১.৬৪ শতাংশ; অন্যান্য অনুদান বাবদ ৩৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা প্রস্তাবিত ব্যয়ের ৩.৬৪ শতাংশ; পণ্য ও সেবা বাবদ ১৭৯ কোটি ৯৯ লাখ ৮ হাজার টাকা, যা মোট ব্যয়ের ১৯.৫২ শতাংশ এবং মূলধন খাতে ২১ কোটি ৯৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা, যা মোট ব্যয়ের ২.৩৯ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সংশোধিত বাজেটের বিষয়ে বলেন, ২০২১-২২ সালের মূল বাজেট ছিল ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে ২৮ কোটি ৮৯ লাখ বৃদ্ধি করে সংশোধিত বাজেট দাঁড়ায় ৮৬০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ওই সংশোধিত বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে অনুদান ৭৩১ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং নিজস্ব আয় হিসেবে ৬৫ কোটি টাকাসহ আয় ধরা হয়েছে ৭৬১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ফলে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা মাত্র যা মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৪.৪৫ শতাংশ।

কোষাধ্যক্ষ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান নয় বিধায় নিজস্ব তহবিল থেকে ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে না। প্রতি বছর এভাবে তহবিলের ঘাটতি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কষ্টসাধ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের নতুন নতুন খাত খুঁজে বের করতে হবে অথবা সরকারের কাছ থেকে বিশেষ অনুদান চাওয়া যেতে পারে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রী নিজ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এবং একাডেমিক ভবন মেরামত ও সংস্কারের জন্য বিমককে একটি বিশেষ তহবিল দিয়েছেন, যেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আশাকরি আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে বর্ধিত হারে এ ধরনের অনুদান আমরা পাবো।

এবার বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়ে ঘোষণা করা বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ৪ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে গবেষণায় বরাদ্দ ছিল ১১ কোটি ৫ লাখ টাকা। আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

চলতি বছরের তুলনায় আসন্ন বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুদান ৫০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বেড়েছে।

নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) জন্য প্রস্তাবিত ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বাজেটে ইউজিসি থেকে অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে ৭৮১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাতগুলো থেকে আয় ধরা হয়েছে ৮৩ কোটি টাকা।

অর্থাৎ বাজেটে ৫৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার মতো ঘাটতি থাকবে, যা প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী আসন্ন অর্থবছরে ৬৭১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পেনশন খাতে। এটা প্রস্তাবিত মোট বাজেটের ৭২ দশমিক ৮৫ শতাংশ।


অধিবেশন বর্জন ভিপি নুরের:
 
বাজেট অধিবেশনে আমন্ত্রণ পেলেও এ অধিবেশনে যোগ দেয়নি শিক্ষার্থী-প্রতিনিধি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। ‘নৈতিকতার’ জায়গা থেকে সিনেট অধিবেশন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। 
নুরুল হক বলেন, গত এক বছর সিনেট সদস্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সভায় আমন্ত্রণ পেলেও আমি সেসবে অংশ নিইনি। আজকেও আমি আমন্ত্রন পেয়েছি তবে অচল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ডাকসুর প্রতিনিধি হয়ে সিনেটের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা নৈতিকতাবিরোধী বলে আমি মনে করি। এ কারণে এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (আজ) অনুষ্ঠিতব্য সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনেও অংশ নেয়নি না। আমার সুস্পষ্ট দাবি, অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের আয়োজন করে সিনেটে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হোক।

শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাস নেন না, অতিরিক্ত সচিবের বক্তব্য ঘিরে হট্টগোল:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাস নেন না। শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই বলে সিনেট অধিবেশনে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু ইউসুফ মিয়া।

অতিরিক্ত সচিবের এমন বক্তব্যে পুরো সিনেটে তখন হট্টগোল সৃষ্টি হয়।হট্টগোলের একপর্যায়ে জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাহবুব হাসান অতিরিক্ত সচিবের এই বক্তব্যের সমালোচনা করেন। সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনা করেন সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মঈন, অধ্যাপক ড. আব্দুস ছামাদ, অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম, অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া এবং অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভুঁইয়া। একই সঙ্গে তাঁরা অতিরিক্ত সচিবের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জ্ঞান দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোন বক্তব্য না দেওয়ার অনুরোধ করেন।

একপর্যায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের অনুরোধে বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করেন অতিরিক্ত শিক্ষাসচিব আবু ইউসুফ মিয়া। 

গবেষণা জালিয়াতি চিহ্নিতকরণের সফটওয়্যার নির্মাণ:

গবেষণাপত্র জালিয়াতি চিহ্নিতকরণের জন্য টার্নিটিন সফটওয়্যার অনুকরণে একটি সফটওয়্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তৈরি করছেন বলে সিনেট অধিবেশনে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন,গবেষণাপত্রের মৌলিকত্ব ও গুণগত মান সমুন্নত রাখতে প্লেজিয়ারিজম পলিসি প্রণয়ন প্রায় চূড়ান্ত। বাংলা ভাষায় রচিত গবেষণাপত্র বা থিসিসের সিমিলারিটি ইনডেস্ক চিহ্নিত করার জন্য টার্নিটিন সফটওয়্যার অনুকরণে একটি সফটওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণ শিক্ষক গবেষক শীঘ্রই প্রণয়ন করতে পারবেন বলে আশা রাখি।

পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন:

বিশ্বব্যাংকের অভিযোগকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করার জন্য সিনেট সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনে প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সামাদ। পরে তার এই প্রস্তাবে অনেকে সমর্থন জানান। এরপর সিনেটের চেয়ারম্যান এবং উপাচার্য আখতারুজ্জামান এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
 

রেডিওটুডে নিউজ/ইআ

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের