
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যের প্রতীক। এটিসহ রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র বন্ধ করার রাস্তা খোঁজা উচিত। তাতে কিছু আর্থিক ক্ষতি হবে। অব্যাহত রাখলে ক্ষতি হবে আরও বেশি। রামপাল বাতিলের মধ্য দিয়ে পরিবর্তনের সূচনা ঘটাতে পারে সরকার। এই দুটি খাতসহ সব খাতে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন তিনি।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘বিগত শাসনামলে জ্বালানি খাতে লুণ্ঠনের দায়’ নিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাবির সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বিগত সরকারের সময়; অর্থাৎ গত ১৫ বছরে দেশে এত বেশি দুর্নীতি ও লুণ্ঠন হয়েছে, তা টাকার অংকে হিসাব করা খুবই দুরুহ। এই দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও সম্পদ অব্যাহত রাখতেই দুর্নীতিবাজদের স্বৈরশাসন ও দমন-পীড়ন করে টিকে থাকতে হয়েছে। মানুষের ভোট ছাড়াই এবং নির্বাচন না দিয়ে জোর করে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে সেই সরকারের পতনের পর পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। সেই পরিবর্তনের জায়গাটা তৈরি করতে সজাগ ও সরব জনগোষ্ঠী থাকতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের বিজয় এনে দেওয়া তরুণদেরও বড় ভূমিকা নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিগত শাসনামলে পতিত প্রধানমন্ত্রীর একক পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা আর্থিক খাতের মতো জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতেও অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। লুটেরাদের সুযোগ করে দিতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিতর্কিত ইনডেমনিটি আইন পাস করেছিল, যার মেয়াদ দফায় দফায় বাড়িয়ে দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াও বিতরণ, সঞ্চালন ও মিটার কেনাকাটার নামে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এতেও ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য মিলেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ১০ দফা সুপারিশ করে তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সম্পাদিত সব চুক্তি পুণর্মূল্যায়ন করে জনসম্মুখে প্রকাশ এবং কোনো চুক্তি দেশের স্বার্থবিরোধী হলে, তা বাতিল করতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০১০ সালের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে জ্বালানি খাতের মাফিয়াদের বিচার করতে হবে। জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ গণশুনানি নিশ্চিত করে নিরবিচ্ছিন্ন মানসম্পন্ন জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম