
দেশের চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে বিএনপির ৩১ দফার রূপরেখা বাস্তবায়ন হতে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৬ আগস্ট) গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিএনপির বিজয় র্যালির আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি একথা বলেন। এদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শেষে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শুরু হয় বিজয় মিছিল।
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এ শোভাযাত্রা আয়োজন করে বিএনপি। এতে আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। ফলে ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত সড়কটি লোকজনে ভরে ওঠে।
‘বিজয় মিছিলটি’ পল্টন মোড় থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, মৎস্যভবন মোড় ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সড়ক হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। এদিন ঢাকা ছাড়াও সব বিভাগীয় শহরে একযোগে বিজয় শোভাযাত্রা করে বিএনপি।
সমাবেশে তিনি বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে শিগগিরই। আমাদের জুলাই ঘোষণাপত্র হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের যে দৃষ্টিভঙ্গি, যে ৩১ দফা, সেই ৩১ দফা বাস্তবায়ন হতে চলেছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। আসুন, আজ আমরা সেই শপথ গ্রহণ করি যে, আমরা বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকা দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে ওনি উপস্থিত আছেন। আসুন আজ আমরা সবাই ওনাকে ধন্যবাদ জানাই যে, তিনি আমাদেরকে নেতৃত্বে দিয়ে আমাদের মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। আমি ধন্যবাদ জানাব দেশের সমস্ত মানুষকেও; রাজনৈতিক দলগুলোকেও, ছাত্রদেরকেও। এবং এটা না বললে নয়, আমি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকেও আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, তাদের সহযোগিতায় আমরা এ বিজয় অর্জন অর্জন করতে পেরেছি।’
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও, যিনি এক-এগারোর মতো ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘বুঝতে হবে, এটা এক দিনের সফলতা নয়। এই সফলতা ৩৬ দিনেরও অর্জন নয়। এই সফলতা সার্বিক ১৭ বছরের আন্দোলনের ফসল। আজ ষড়যন্ত্র হচ্ছে। হ্যাঁ, ষড়যন্ত্র হচ্ছে, কেউ এক-এগারোর ষড়যন্ত্রে আছেন, কেউ আমার দলের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়েছে, বৃষ্টির মধ্যে আমরা গিয়েছিলাম। এই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়ে দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখা হয়েছে, আমিও স্বাগত জানাই। একটা কথা বলি, যেখানে ২৩ বছর আন্দোলনের পরে দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেখানে শহীদ রাষ্ট্রপতি নামটি রাখা হয় নাই। তারপর বাকশালের পেট থেকে যে গণতন্ত্রকে বের করে এনেছিলেন, সেখানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম আসে নাই, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তার নাম আসে নাই। এটা আমাদেরকে, আমাকে অত্যন্ত পীড়া দিয়েছে বলে এই জনসম্মুখে বললাম। আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি তারপরেও সব কিছু স্বীকার করে নিয়ে, সব ভুলভ্রান্তি স্বীকার করে নিয়ে গতকালের ঘোষণায় আমি স্বাগত জানাচ্ছি আবারও।’
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
সমাবেশে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শাহজাদা মিয়া, লুৎফুজ্জামান বাবর, খায়রুল কবির খোকন ও হাবিব উন নবী খান সোহেল উপস্থিতি ছিলেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম