
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে প্রত্যাশিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিএনপি প্রত্যাশা করে, জনগণ বিএনপিকেই নির্বাচিত করবে।
ভোট নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে কঠিন হতে যাচ্ছে। অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। কিন্তু কঠিন পথ, ষড়যন্ত্র ভণ্ডুল করে সফল হওয়া সম্ভব, যদি বিএনপি নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকে। তাই সবাইকে ভোট আর ৩১ দফা নিয়ে ষড়যন্ত্র ঠেকাতে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
সোমবার (১১ আগস্ট) নওগাঁয় জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাচুর্য়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তারেক রহমান বলেন, জনগণ দেশে স্থিতিশীল অবস্থা চান, তারা প্রত্যাশার বাস্তবায়ন চান। ভোটের পরের বিষয়গুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ, দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা।
বিএনপির সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ, সেগুলো মোকাবেলা করতে হবে। জনগণ মনে করে, তাদের জন্য ভালো কিছু বিএনপিই করতে পারে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস, ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। এমন কিছু করা যাবে না, যাতে করে মানুষের আস্থা নষ্ট হয়, দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সুসময়ে অনেক ঘুরঘুর করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা যেন বিএনপির সুনাম নষ্ট না করতে পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
এর আগে দুপুর একটা নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলনের অধিবেশনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।
উদ্বোধনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত ও দলীয় গান পরিবেশন করা হয়। সেই সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধে ও জুলাই আন্দোলনে সব শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সম্মেলনে প্রধানবক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম ও এএইচএম ওবায়দুর রহমান চন্দন।
এদিন দুপুর দুইটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল ছয়টা পর্যন্ত। কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং দুটি সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলার ১৪টি ইউনিটের এক হাজার ৪১৪ ভোটার গোপন ব্যালটে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন।
এদিকে দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জেলা বিএনপির সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এতোদিন নানা সীমাবদ্ধতায় সম্মেলন করতে না পারলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেশ ঘটা করে সম্মেলনের আয়োজন করেছে দলটি। তাই সম্মেলন ঘিরে পুরো শহর সেজেছে নতুন কমিটির নেতৃত্বে আসা নেতাদের ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে। এই সম্মেলন ঘিরে ১৭ বছর হামলা, মামলা, নির্যাতন ও কারাবরণে জর্জরিত নেতাকর্মীরা ফিরে পেয়েছেন প্রাণচাঞ্চল্য। কর্মীরাও মুখে আছেন নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১০ সালে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন মামুনুর রহমান রিপন। ২০১৫ সালে ওই কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সম্মেলনের মাধ্যমে আর কোনো কমিটি গঠন হয়নি।
এরপর ২০২২ সালে আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নুকে আহবায়ক ও বায়েজিদ হোসেন পলাশকে সদস্য সচিব করে গঠিত আহবায়ক কমিটির মাধ্যমে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছিলো।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম